সোমবারের মধ্যে পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনের দিনক্ষণ জানাতে হবে রাজ্য সরকারকে। না হলে একতরফা ভাবে ভোটের দিন ঘোষণা করবে কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। ঘটনাচক্রে, এ দিনই পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়েও রাজ্যের বিপক্ষেই রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
২০১১ সালের পুজোর পরপর কলকাতা পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলা দাম মারা যান। তার পর থেকে প্রায় দেড় বছর কেটে গেলেও ওই ওয়ার্ডে কোনও উপ-নির্বাচন হয়নি। এ নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন পুর-দফতরকে একটি চিঠিও দিয়েছিল। দীর্ঘ দিন ধরে ওয়ার্ডটি ফাঁকা থাকায় এ নিয়ে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থের মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলার গত শুনানির দিন ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের পুরসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকাকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিল। সেই মতো এ দিন সকালেই পুরসচিব হাইকোর্টে হাজির হন। বেলা দুটোর পরে মামলাটি বিচারের জন্য ওঠে। এর পরে ডিভিশন বেঞ্চ পুরসচিবের কাছে জানতে চায়, উপ-নির্বাচন নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন চিঠি দেওয়ার পরেও ভোট ঘোষণা হয়নি কেন? গোপালিকা এর সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি।
আবেদনকারীর আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এ দিন আদালতে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কাউন্সিলরের মৃত্যুর ৬ মাসের মধ্যে উপ-নির্বাচন করার কথা। এর পরেই আদালত জানতে চায়, ওই ওয়ার্ডে কবে উপ-নির্বাচন হবে। যার উত্তরে পুরসচিব জানান, এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার তাঁকে কিছু নির্দেশ দেয়নি। এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চ ক্ষোভের সঙ্গে বলে, “এটা কোনও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চলছে!” এর পরেই সোমবার উপ-নির্বাচনের দিনক্ষণ জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতিরা।
আদালতের এই নির্দেশ নিয়ে এ দিন অবশ্য মহাকরণে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও পুরসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকাও। তবে পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছেন, ইলাদেবীর মৃত্যুর পরেই নিয়মমাফিক তা পুর দফতর ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছিল। এর পরে ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করার ব্যাপারে তাদের কোনও দায়িত্ব নেই। সেটি পুরোপুরি পুর দফতর ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিষয় বলে ওই সূত্রের দাবি। পুর সূত্রের খবর, মাস তিন-চারেক আগে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মিহির সাহাও মারা গিয়েছেন। ফলে ওই ওয়ার্ডটিও এখন শূন্য। আদালতের এ দিনের রায়ের জেরে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সঙ্গে ২৪ নম্বরেও উপ-নির্বাচন ঘোষণা করা হবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কলকাতা পুরসভার অন্দরে। |