১০০ দিন কাজ প্রকল্পে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগে পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ ষোলো জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করল ব্লক প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার মাড়গ্রাম থানায় হাঁসন ১ পঞ্চায়েতের ওই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেন রামপুরহাট ২ ব্লকের ভারপ্রাপ্ত বিডিও মলয়কুমার ঘোষ। অভিযুক্তেরা হলেন প্রধান বিনোদ লেট, পঞ্চায়েতের নির্বাহী সহায়ক অরুণেশ ঘোষ, পূর্বতন নির্মাণ সহায়ক দেবব্রত সিংহ ও ওই পঞ্চায়েতের ন’টি গ্রাম সংসদে দায়িত্বপ্রাপ্ত ১৩ জন সুপারভাইজার।
একশো দিন প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার বিশ্বজিৎ মোদক বলেন, “হাঁসন ১ পঞ্চায়েতে ১০০ দিন প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে জেলা থেকে পাঁচ সদস্যের এক তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছিল। ওই দলের করা তদন্তে বড় ধরনের গরমিল ধরা পড়েছে। তা নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানকে শো-কজও করা হয়। কিন্তু তিনি সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিডিওকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।” পুলিশ জানায়, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, ২০১২ সালের এপ্রিল-আগস্ট মাস পর্যন্ত হাঁসন ১ পঞ্চায়েতের ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে দুর্নীতি ও টাকা তছরুপের অভিযোগ করেন মাড়গ্রাম থানার নিঙহা গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। তথ্য জানার অধিকার আইনের সাহায্য নিয়ে পঞ্চায়েত থেকে অভিযোগকারীরা নানা তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। তাতেই খরচ ও প্রকৃত কাজ নিয়ে ব্যাপক গরমিল ধরা পড়ে বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগকারীরা মোট ১ কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করে চিঠি দেন জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে। পরে এ নিয়ে তাঁরা উচ্চ আদালতেরও দ্বারস্থ হন। আদালতে অবশ্য ৩৫ লক্ষ টাকার আর্থিক অভিযোগেরই প্রমাণ মেলে বলে খবর। আদালত জেলাশাসককে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
রাজ্যের ক্ষমতায় পরিবর্তন আসার পরে ২০১১ সালেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন প্রধান বিনোদ লেট। তাঁর অবশ্য দাবি, “আমি কাগজে-কলমে এখনও কংগ্রেসেরই প্রধান। কোথাও কোনও কাজ না করে আমি আর্থিক দুর্নীতি করেছি, এ কথা কেউ প্রমাণ করতে পারবেন না। তবে বলতে পারেন, প্রয়োজনের তুলনায় কম কাজ হয়েছে।” নির্মাণ সহায়ক দেবব্রত সিংহ-র (বর্তমানে মাড়গ্রাম ২ পঞ্চায়েতে কর্মরত) দাবি, “আমাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে।” নির্বাহী সহায়ক অরুণেশ ঘোষের সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। |