টুকলি ধরায় পরীক্ষাচলালীন ক্লাসে ঢুকে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল ছাত্র পরিষদের এক নেতা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। বুধবার ঘটনাটি ঘটে আলিপুরদুয়ার কলেজে। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাঙচুর ঠেকাতে গিয়ে এ দিন আক্রান্ত হন কলেজের শিক্ষক তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পরিদর্শক দিলীপ রায়। হামলাকারীরা তাঁকে লক্ষ করে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। পরে দিলীপবাবুর অভিযোগ, এক ছাত্রের নকল ধরেন এক শিক্ষিকা। ভাস্কর বাগচী নামে এক শিক্ষক সেখানে যান এবং ছাত্রটিকে ছেড়ে দিতে বলেন। শিক্ষিকা প্রতিবাদ করায় ভাস্করবাবুর সঙ্গে বাদানুবাদ হয়। এর পরে বহিরাগতরা ক্লাসে ঢুকে হামলা চালায়। ঢিল ছোড়ে। দিলীপবাবু বলেন, “পুরো ঘটনাটি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে লিখিত জানিয়েছি।” যদিও শিক্ষক ভাস্করবাবু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “ওই ধরণের কিছু হয়নি।” শিক্ষিকা ওই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
কলজের অধ্যক্ষ সুব্রত পঞ্চানন বলেন, “বিএ পাট-টু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরীক্ষা চলাকালীন ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মল্লিক কয়েকজন বহিরাগতকে নিয়ে ক্লাসে ঢুকে দরজা ও একটি বেঞ্চ ভাঙে। ঠেকাতে গেলে শিক্ষক তথা পরীক্ষা পরিদর্শক দিলীপ রায়ের উপরে ঢিল ছোঁড়া হয়। |
ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।” যদিও শ্যামলবাবু ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।”
কলেজে সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন এনবি-১ ঘরে এক শিক্ষকা প্রথম বেঞ্চে বসে থাকা এক ছাত্রের টুকলি ধরেন। ওই ছাত্র ক্লাস থেকে বার হয়ে কলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজনকে ডেকে আনে। ওই সময় পরীক্ষা চলছিল। বহিরাগতদের মধ্যে ছাত্রপরিষদ নেতা তথা ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সম্পাদক শ্যামল মল্লিক ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে কয়েকজন ক্লাসে ঢুকে দরজা, চেয়ার ও একটি বেঞ্চ ভাঙে। ওই সময় ক্লাসে ছিলেন শিক্ষক রাকেশ মল্লিক। তিনি বলেন, “আচমকা একদল যুবক ক্লাসে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে দেয়। ওরা পরীক্ষা ভন্ডুল করার চেষ্টা করে কিন্তু সেটা হয়নি। পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছে।” ঘটনার পরে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে পরীক্ষার সময় কলেজ চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করা হলেও কেমন করে বহিরাগতরা ভিতরে ঢুকে হামলা চালাচ্ছে? ওই বিষয়ে পুলিশ কর্তারা স্পষ্ট জানাতে পারেননি। আলিপুরদুয়ার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, “কেমন করে ঘটনা ঘটল খোঁজ নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কলেজের টির্চাস কাউন্সিলের সম্পাদক রাজীব ভৌমিক জানান, টুকলি ধরার ঘটনাকে ঘিরে প্রায়দিন ঝামেলা হচ্ছে। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অধ্যক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। এসএফআই নেতা তথা ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ কিশোর মুন্সী বলেন, “যে ভাবে বহিরাগতরা ভাঙচুর চালিয়ে পরীক্ষা চলাকালীন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে তা মানা যায় না।” ঘটনার পরে আতঙ্কিত ছাত্রীরা বলেন, “কখন হামলা হবে ঠিক নেই। বাইরে পুলিশ থেকে লাভ হচ্ছে না।” |