কনেযাত্রী বোঝাই দু’টি পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল তিন কিশোর-সহ চার জনের। জখম হলেন ৪০ জন। তার মধ্যে ৪ জন শিশু ও ১১ জন মহিলা। মঙ্গলবার রাতে সারেঙ্গা থানার কড়াপাড়ার কাছে, বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কের উপর দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহতদের মধ্যে ৯ জনকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। ১২ জনের চিকিৎসা চলছে পিড়রগাড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে দু’জনের বাড়ি সারেঙ্গার দুকনালা গ্রামে। তাদের নাম বাপি দুলে (১৬) ও গৌতম দুলে (১৪)। অপর মৃত প্রশান্ত দুলের (১৪) বাড়ি সারেঙ্গার বেলেপাল গ্রামে। বাপি গড়রাইপুর হাইস্কুলে দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ওই হাইস্কুলেই অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত গৌতম ও প্রশান্ত। মৃতদের মধ্যে পবন মাহাতো (৫১) সিমলাপালের চকবাইদ গ্রামের বাসিন্দা। দুকনালা গ্রাম থেকে প্রায় ৩০ জন সারেঙ্গার বীরভানপুর গ্রামে বৌভাতের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। অন্যদিকে, সিমলাপালের চকবাইদ গ্রাম থেকে ২০ জন কনেযাত্রী একটি পিকআপ ভ্যানে রাইপুরের পাড়রি গ্রামে বৌভাতের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। তার আগেই দুর্ঘটনা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পবনবাবুর। বুধবার সকালে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় বাপি, গৌতম ও প্রশান্ত। পিড়রগাড়ির ওই নার্সিংহোমে শুয়ে দুকুনালা গ্রামের প্রসেনজিৎ দুলে বলেন, “টাল সামলাতে না পেরে সবাই পিকআপ ভ্যান থেকে ছিটকে পড়ি।” যাঁর মেয়ের প্রীতিভোজে যেতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা, সেই মানিক দুলের আক্ষেপ, “সবাই আনন্দ করবে বলেই পিকআপ ভ্যানটা ভাড়া করেছিলাম। এমন ঘটবে কী করে জানব?” চার বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে বড় ছিল বাপি। তার বাবা শম্ভু দুলে বলেন, “সব শেষ হয়ে গেল।” বেলেপালের কানন দুলের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে প্রশান্ত ছিল বড়। তার মামা রাজু দুলের আক্ষেপ, “পড়াশোনার জন্যই আমার বাড়িতে থাকত ভাগনে। দিদিকে কী বলে শান্তনা দেব?” সারেঙ্গার বিডিও হীরকজ্যোতি মজুমদার বলেন, “মৃত ও আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া বিবেচনা করা হচ্ছে।” |