সরকারি ভর্তুকিতেই নামমাত্র ফি দিয়ে পড়া চলে সরকার অনুমোদিত কলেজগুলিতে। তেমনই এক কলেজে দু’শো পড়ুয়ার ছ’মাসের ফি মকুবের দাবিতে রাত পর্যন্ত অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে রাখল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে হরিপুর নেতাজি শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ে রাজ্যের শাসকদলের অনুগত ছাত্র সংগঠনেরই একচ্ছত্র আধিপত্য। যদিও ছোট-বড় নানা ব্যাপারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব লেগেই থাকে। তার জেরে রাস্তা অবরোধ, অধ্যক্ষ-ঘেরাও, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে হামলা কিছুই বাদ যায়নি। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ছাত্রনেতাদের মদত দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে বারবার। তেমনই ফি মকুবের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখা হয় অধ্যক্ষ সুধানাথ চট্টোপাধ্যায়কে। শেষমেশ তিনি ফি মকুবের জন্য কলেজ তহবিল থেকে ৭৬ হাজার টাকা বরাদ্দ করলে ছাত্রনেতারা নিরস্ত হন।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য বলেন, “আমি খোঁজ নেব। ঘটনাটি সত্য হলে বলব এটা অনুচিত। দলের ছাত্র সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জানতে চাইব, তাঁরা এই ধরনের কর্মসূচির অনুমোদন দিয়েছিলেন কি না। যদি তা না হয়, দোষীদের চিহ্নিত করার কথা ভাবতে হবে।”
কলেজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১২০০। অনার্সের জন্য ফি মাসে ৭৫ টাকা, পাস কোর্সে ৫০ টাকা। কয়েক দিন আগে টিএমসিপি-র বিভিন্ন গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ফি মকুবের জন্যে ছাত্রছাত্রীদের নামের কয়েকটি তালিকা জমা দেওয়া হয়। সংখ্যাটা ছিল প্রায় চারশো। এদের মধ্যে ২০০ পড়ুয়ার ফি মকুবের দাবি জানায় টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ। প্রকৃত দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও ওই তালিকায় কিছু নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
এফএসআইয়ের উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক অয়ন বসুর অভিযোগ, “অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে রাখা বা হেনস্থা করা তৃণমূলের চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা শিক্ষকদের হেনস্থা বা ঘেরাও করার বিরুদ্ধে।” টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি কালাম মণ্ডলের পাল্টা দাবি, “আমরা অধ্যক্ষকে ‘ঘেরাও’ করিনি। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি।” বরাদ্দ ৭৬ হাজারে ২০০ জনের ফি জোগানো কী ভাবে সম্ভব? স্থানীয় বিধায়ক ধীমান রায়ের দাবি, “বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারের পড়ুয়াদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। রাজনৈতিক রং দেখা হচ্ছে না।” |