রাজা আসে রাজা যায়, রবীন্দ্রসদনের হাল ফেরে না
রকারি ভাবে ঘটা করে আজ রবীন্দ্রজয়ন্তীর আয়োজন। কোথায়?
যেমন বহরমপুরে রবীন্দ্রসদনে অধিকাংশ আসনই বসতে গেলেই সশব্দে ‘প্রতিবাদ’ করে, আলো আর শব্দের ব্যবহারও সঙ্গীন। বহরমপুরের সেই রবীন্দ্রসদনে আজ, বৃহস্পতিবার ২৫শে বৈশাখ পালন হবে। প্রেক্ষাগৃহটি বাতানুকূল করার আশ্বাস দিয়েছিলেন জেলাশাসক। তারপরে প্রায় চার বছর পেরিয়ে গিয়েছে। বদলে গিয়েছেন সেই জেলাশাসক। কিন্তু রাজায় যায়, রাজা আসে। রবীন্দ্রসদন বদলায় না। গরমকালে তাই সেখানে অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়া মানে সঙ্গে পাখা নিয়ে যাওয়া প্রায় আবশ্যক!
বহরমপুরে রবীন্দ্রভবনের হাল।
কয়েক বছর আগে তৎকালীন জেলাশাসক সুবীরকুমার ভদ্র ঘোষণা করে ছিলেন এক কোটি টাকার প্রকল্পে সংস্কার করা হবে রবীন্দ্রসদনের। কিন্তু, প্রতিশ্রুতির বয়স চার পেরিয়ে পাঁচের দিকে এগোলেও রবীন্দরসদন আছে রবীন্দ্রসদনেই। চেহারা কেমন কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রসদনের?
১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবর্ষে তৈরি হয় কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রভবন। তার পর থেকে তেমন কোনও সংস্কার হয়নি। নিজস্ব সাউন্ড ও লাইট সিস্টেম ছিল না। প্রেক্ষাগৃহের সব জায়গা থেকে মঞ্চ সমানভাবে দেখাও যেত না। স্টেজের বেশ কিছু অংশের সংস্কারের প্রয়োজন। আসনগুলি নববড়ে।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য টনক নড়েছে রাজ্য সরকারের। ৩.৩২ কোটি টাকায় আধুনিকীকরন শুরু হয়েছে। এতে রাজ্য সরকারের অংশীদারিত্ব ৪০ শতাংশ। জেলা তথ্য ও সাংস্কৃতিক দফতরের আধিকারিক অলোক সান্যাল বলেন, “আধুনিকীকরণ করার উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। বাতানুকূলও করা হচ্ছে।”
প্রশিশ্রুতি রয়েছে বহরমপুরেও। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক করুণাময়ী ভৌমিক বলেন, “আগামী ২১ মে-র পর থেকে রবীন্দ্রসদনে কোন অনুষ্ঠান করা যাবে না।” কিন্তু আদৌ কাজ হবে কিনা তা নিয়ে তিনিই সন্দিহান। সংস্কারের জন্য সদন কত দিন বন্ধ থাকবে? কত টাকার প্রকল্প? করুণাময়ীদেবী বলেন, “কবে হবে ঠিক নেই! আগে ইট পড়ুক!”
কৃষ্ণনগরে রবীন্দ্রভবনের হাল।
১৯৬৪ সলের ১ সেপ্টেম্বর জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে গড়া হয় বেসরকারি সংস্থা ‘মুর্শিদাবাদ রবীন্দ্র মেমোরিয়াল অ্যাসোসিয়েশন’। সদন গড়তে খরচ করা প্রায় ৭ লক্ষ টাকা। বেসরকারি ভাবে সংগ্রহ করা হয় ২ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা। বাকিটা কেন্দ্র ও রাজ্যের অনুদান। বিঘা সাতেক জমির উপর গড়ে তোলা ৭২০ আসনের রবীান্দ্রসদনে বর্তমান আসন সংখ্যা ৭২৫। বহরমপুরের ‘ঋত্বিক’ নাট্যগোষ্ঠীর সম্পাদক মোহিতবন্ধু অধিকারি বলেন, “রাজ্যের সতকারি হল গুলির মধ্যে সব চেয়ে বেশি অনুষ্ঠান হয় বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে। কিন্তু সাড়ে তিন দশক আগের পরিকাঠামোর পরিবর্তন না হওয়ায় আধুনিক কালের নাট্য প্রযোজনায় খুব অসুবিধা হয়। আলো, শব্দ ও বাতাস, গ্রিনরুমকোনওটিই ঠিকঠাক নেই। জেনারেটরের আবার তেল কিনে দিতে হয় কিন্তু তার আবার রসিদ মেলে না।” কেন? তথ্য সংস্কৃতি অধিকর্তার কাছে কোনও জবাব মেলেনি। বহরমপুরের ‘যুগাগ্নি’র কর্ণধার অনুপনম ভট্টাচার্য বলেন, “সাড়ে তিন দশকের মধ্যে সংস্কারের নামে লক্ষ লক্ষ সরকারি টাকা খরচ হলেও শিল্পী, কলাকুশলী ও দশর্ককদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে কিছুই করা হয়নি।”

—নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.