মুম্বই-পুণে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যেতে যেতে ৫-৬টা টানেল পেরোলাম, যার প্রত্যেকটার শেষেই আলোর দেখা মিলল। কিন্তু আমাদের ক্রিকেট সফরে সেই আলোর সন্ধান পাচ্ছি কোথায়?
পুণের যে হোটেলের ঘরে বসে এই লেখা লিখছি, গত বছর আইপিএলেও এই হোটেলের একই ঘরে ছিলাম। এই এক বছরে তেমন কিছুই পাল্টায়নি, পাল্টেছে শুধু আমাদের অবস্থা। গত বছর এখানেই পুণেকে হারিয়ে লিগ টেবলে দু’নম্বরে উঠেছিলাম। এখানকার ম্যাচেই ঠিক হয়ে যায়, কোয়ালিফায়ারে আমাদের দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে খেলতে হবে। আর এ বার....।
হ্যাঁ, আমার দোষটা কম নয়। যেমন ব্যাট করা উচিত ছিল, তেমন ব্যাট করতে পারলাম কোথায়? ওয়াংখেড়েতে শট বাছাইয়ের ভুলেই ডুবলাম। তার আগে চিপক ও জয়পুরেও অন্য স্ট্রোক খেললেই ভাল হত। আমাদের পুরো দলের ব্যাটিংই হতাশার অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। মুম্বই যে রানটা মঙ্গলবার তুলেছিল, সেই রানটা আমরাও তুলতে পারতাম। কিন্তু ‘প্যানিক বাটন’-টা আমরা এত আগে টিপে দিলাম যে, শেষ পর্যন্ত সেটাই কাল হয়ে দাঁড়াল। ওই উইকেটে রান তোলা এমন কিছু কঠিন নয়। আসলে জুজু উইকেটে নয়, আমাদের মনের মধ্যেই ছিল। সেটাই সর্বক্ষণ তাড়া করে বেড়াল আমাদের।
আর চারটে ম্যাচ বাকি। নিজেদের উজাড় করে দিতে হবে। আমার কাছে কিন্তু সফর এখনও শেষ হয়ে যায়নি। বরাবরই বলে আসছি, যে কোনও সিস্টেমেরই মাপকাঠি, সেখান থেকে আসা ব্যক্তিগত সাফল্যের পরিমান। আমরা সফল হই বা না হই, দলের দেশি প্লেয়াররা নিজেদের পারফরম্যান্সে আরও উন্নতি করল কিনা, দেশের তারকারা জাতীয় দলের হয়ে ভাল খেলার রসদ পেল, কি পেল না এবং বিদেশিরা তাদের দাপট ধরে রাখতে পারল কি না, এই ব্যাপারগুলোও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। যদিও আইপিএল জেতার চেয়ে বড় নয়, কিন্তু জরুরি তো বটেই।
সন্ধেয় স্পনসরদের অনুষ্ঠানের পর এক বন্ধুর সঙ্গে আমার ও নাতাশার এখানকার একটা রেস্তোরাঁয় ডিনারে যাওয়ার কথা। এখানকার বিখ্যাত পাও ভাজি পেলে মন্দ হয় না। তার পর আইসক্রিম বা কুলফি-ফালুদা। রাস্তায় লোকজন না থাকলে খাওয়ার পর একটু হাঁটাও যেতে পারে। এ সব বিলাসিতা মনে হচ্ছে? হতেই পারে। কিন্তু বিশ্বাস করুন, এ সব আমি মাঝে মধ্যেই করে থাকি। এই তো দু’দিন আগে রাত দু’টোয় মেরিন ড্রাইভে হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। জীবনের এই ছোটখাটো আনন্দগুলোই মাঝে মাঝে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সে ক্রিকেট মাঠেই বলুন বা অফিসে। জীবনে এ ভাবেই আনন্দ আনার চেষ্টা করি। এখন যার বেশি প্রয়োজন আমাদের সবার। |