|
|
|
|
‘বিশেষ মর্যাদার’ রাজনীতি বিজেপির |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
নীতীশের পথে হেঁটে, রাজ্যের মানুষের ভাবাবেগকে উস্কে দিয়ে ঝাড়খণ্ডের আগামী ভোটে বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপি। নীতীশ মতোই আগামী বিধানসভা ভোটের প্রচারে অর্জুন মুন্ডার মূল হাতিয়ারই হবে ঝাড়খণ্ডের জন্য ‘বিশেষ মর্যাদা’-র দাবি। এই দাবিকেই মুখ্য হাতিয়ার করে বিধানসভা ভোটের প্রচারে নামবে ঝাড়খণ্ডের বিজেপি।
বিশেষ মর্যাদার দাবির বিষয়টি নিয়ে নির্বাচনে প্রচার চালানোর বিষয়ে রাজ্যস্তরের নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও এই ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডার কথায়, “বিশেষ মর্যাদার জন্য প্রয়োজনীয় সব বিষয়ই এ রাজ্যে রয়েছে। প্রাকৃতিক আর খনিজ সম্পদ সবই এখানে রয়েছে। সর্বোপরি এটি একেবারেই আদিবাসী অধ্যুষিত রাজ্য। তা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়নি। আমরা এই বিষয়টি মানুষের কাছে আবারও তুলে ধরব।” মুন্ডার বক্তব্য, বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা পেলে কেন্দ্রের প্রচুর অনুদান আসবে। যা এখনও এই রাজ্য কিছুই পায় না। তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্য আদিবাসী অধ্যুষিত হলেও আদিবাসীরাই এখানে সবচেয়ে পিছিয়ে। যে প্রাকৃতিক সম্পদ আদিবাসী এলাকায় রয়েছে তার সুবিধা তাঁরাই পান না। এ রাজ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর জলে উৎপন্ন বিদ্যুৎ অন্য রাজ্যের কাজে লাগে। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন জরুরি।”
মুখে স্বীকার না করলেও মুণ্ডা কিংবা রাজ্য বিজেপির এই পরিকল্পনার পিছনে আদিবাসী এলাকার ভোট ব্যাঙ্ক অটুট রাখা কিংবা নতুন ভোটব্যাঙ্ক তৈরি করারও একটা উদ্দেশ্য রয়েছে। তাদের নিকটতম বিরোধী, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা তো বটেই, বাবুলাল মরাণ্ডির ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চাও এ বার সাঁওতাল পরগনা থেকে ভালো ভোট টানবে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে। তাই সাঁওতাল পরগনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছে বিজেপি।
বিশেষ মর্যাদার দাবি অতীতে একাধিকবার উঠেছে। কিন্তু কেন্দ্র মানেনি। এমনকী বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারও এ রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদা দেয়নি। কেন? রাজ্য বিজেপির বক্তব্য, তখনকার পরিস্থিতি আর বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে।
এখানকার বিজেপি নেতাদের দাবি, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যা তাতে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পালে ভালো হাওয়া থাকবে। কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় এলে আবারও ঝাড়খণ্ডকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। ফলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যবাসীর কাছে এই বিষয়টি গ্রহণ যোগ্যতা পাবে বলেই ধারণা রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের।
সরকার পড়ে যাওয়ার পরে প্রায় চার মাস হয়ে গেল রাজ্যে বিধানসভা মুলতুবি রেখে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনও দলই বিকল্প সরকার তৈরি করতে পারেনি। বিধানসভা ভেঙে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসিত রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করাতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকারও। কেন্দ্রের এই চিন্তা-ভাবনাকে রাজ্য বিজেপি সাধুবাদ জানালেও ১৯ জুলাইয়ের আগে রাজ্যে নির্বাচন করানোর দাবিও তুলছে তারা। কারণ ১৮ জুলাই ছ’মাসের রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। |
|
|
|
|
|