অনেকক্ষণ কড়া নাড়ার পরেও কেউ দরজা না খোলায় একতলার জানলা দিয়ে হাত গলিয়ে চাবি নিয়ে তালা খুলে বাড়িতে ঢোকেন পরিচারিকা। বাড়িতে অসুস্থ বৃদ্ধ দম্পতি থাকায় তাঁকে অবশ্য প্রায়ই এ ভাবে ঢুকতে হয়। কিন্তু বুধবার সকালে ওই বাড়িতে ঢুকে পরিচারিকা মিতা মণ্ডল দেখেন, একতলার মেঝেয় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি। তড়িঘড়ি প্রতিবেশীদের খবর দেন পরিচারিকা। পুলিশ এসে দেখে, বৃদ্ধ মৃত আর তাঁর স্ত্রী গুরুতর জখম।
বুধবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রিজেন্ট পার্ক থানার পূর্ব পুটিয়ারির আনন্দপল্লিতে। ওই দম্পতির নাম ব্রজবল্লভ সাহা (৭৫) এবং কাঞ্চনরানি সাহা (৬২)। গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন কাঞ্চনরানিদেবী।
যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “কী ভাবে ব্রজবল্লভবাবুর মৃত্যু হল, কী ভাবেই বা তাঁর স্ত্রী জখম হলেন, তা নিশ্চিত জানা যায়নি। ব্রজবল্লভবাবুর দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।” তবে পুলিশের একাংশের অনুমান, দীর্ঘ অসুস্থতার কারণে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন ওই দম্পতি। সেই কারণেই ওই বৃদ্ধ স্ত্রী-র গলায় ছুরি বসিয়ে পরে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। পুলিশ জানায়, দু’জনেরই গলার বাঁ দিকে ধারালো অস্ত্রের ক্ষত ছিল। বাড়ির মেঝে থেকে একটা ছুরি ও ব্লেড মিলেছে।
পুলিশ জানায়, ব্রজবল্লভবাবুর তিন ছেলে, তিন মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দুই ছেলের সঙ্গে ওই দম্পতি থাকতেন। আর এক ছেলে অন্যত্র ভাড়া থাকেন। বেশ কিছু দিন ধরেই ওই দম্পতি অসুস্থ ছিলেন। ব্রজবল্লভবাবু পক্ষাঘাতগ্রস্ত ছিলেন। ঘরে সামান্য হাঁটা-চলা করতে পারতেন। তালতলায় সাহা পরিবারের মুদির দোকান রয়েছে। বুধবার ব্রজবল্লভবাবুর দুই ছেলে পঙ্কজ ও শ্যামল প্রতিদিনের মতো দোকানে যান। পঙ্কজের স্ত্রী গিয়েছিলেন বাপের বাড়িতে। ছোট ছেলে শ্যামল অবিবাহিত।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এ দিন পরিচারিকা মিতা মণ্ডল বাড়িতে ঢুকে দেখেন ওই কাণ্ড। প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, ওই দম্পতি অসুস্থ থাকায় মিতাকে প্রায়ই জানলা দিয়ে হাত গলিয়ে চাবি নিয়ে তালা খুলে বাড়িতে ঢুকতে হয়। |