|
|
|
|
|
|
|
নেট ব্যাঙ্কিং |
ব্যাঙ্কের কাজ বাড়িতেই
কম্পিউটারে আপনি তেমন সড়গড় নন। তাতে কী? ইন্টারনেট মারফত
ব্যাঙ্কের কাজ করার পদ্ধতি শিখে নিলে দেখবেন বিষয়টি জলের মতো।
তখন
আর ব্যাঙ্কে যেতেই ইচ্ছে করবে না। বলছেন
অমিতাভ গুহ সরকার |
|
কথায় কথায় ব্যাঙ্কে যেতে অনীহা? লম্বা লাইনে দাঁড়াতে আপত্তি? পরিষেবা
না-পাওয়ায় বিরক্তি? এ সবের কিছুই থাকবে না, যদি নেট ব্যাঙ্কিং-এর জগতে ঢুকে পড়েন। শিখে নিলে ব্যাপারটা বেশ সহজ। একবার অভ্যস্ত হয়ে পড়লে আর ব্যাঙ্কে যেতে ইচ্ছে করবে না। কাজ হবে মন্ত্রের মতো। ঘরে বা অফিসে বসেই। সবই তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জাদু। বেশির ভাগ ব্যাঙ্কে কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেম (সিবিএস) চালু হওয়ায় দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নেট ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে এখনও ততটা না-হলেও, বড় বেসরকারি ব্যাঙ্কের বহু গ্রাহকই অনলাইন ব্যাঙ্কিংয়ে অভ্যস্ত। দরকার শুধু ইন্টারনেটযুক্ত একটি কম্পিউটার। দেখে নেওয়া যাক, নেট ব্যাঙ্কিয়ের মাধ্যমে কী ভাবে নিজের অ্যাকাউন্ট ঘরে বসেই পরিচালনা করা যায়।
শুরু করুন আজই
১) প্রথমে আপনার ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট খুলুন।
২) কাস্টমার আইডি ও নেট ব্যাঙ্কিং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ-ইন করুন।
৩) ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট-এ বহু ব্যাঙ্ক কাস্টমার আইডি উল্লেখ করে।
৪) অনেক ক্ষেত্রে তা জানিয়ে দেওয়া হয় অ্যাকাউন্ট খোলার পর পাঠানো ‘ওয়েলকাম লেটার’-এ।
৫) অনলাইন ব্যাঙ্কিয়ে নাম নথিবদ্ধ করার সময়ে কোনও কোনও ব্যাঙ্ক পাসওয়ার্ড দিয়ে দেয়।
৬) না-হলে নিজেকে পাসওয়ার্ড তৈরি করে নিতে হয়।
৭) তবে ব্যাঙ্কের দেওয়া পাসওয়ার্ড পরে বদল করে নেওয়াই ভাল। তাতে সুরক্ষা বাড়ে।
৮) কাস্টমার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগ-ইন করলেই নেট ব্যাঙ্কিংয়ের জগত্ খুলে যাবে আপনার সামনে। এ বার চটজলদি করে নিতে পারেন ব্যক্তিগত ব্যাঙ্কিংয়ের বহু কাজ।
লাইনে না-দাঁড়িয়েও যা হয়
নগদে টাকা তোলা ও জমা দেওয়া ছাড়া ব্যাঙ্কের বেশির ভাগ কাজকর্মই করা যায় নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে। এই কাজের তালিকা অবশ্য বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হতে পারে। তবে সাধারণ ভাবে কী কী কাজ নেট ব্যাঙ্কিংয়েই সারা যায়, এ বার চোখ বোলাব সেগুলির উপর।
|
|
• নিজের ব্যাঙ্কের অন্য কোনও অ্যাকাউন্টে অথবা অন্য ব্যাঙ্কের কোনও অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার।
• অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স জানা এবং গত পাঁচ বছরের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট ডাউনলোড করা।
• ফিক্সড ডিপোজিট এবং রেকারিং ডিপোজিটে টাকা জমা করা।
• ডিমান্ড ড্রাফ্ট, চেক বই, অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্টের জন্য আবেদন করা।
• বিদ্যুত্, টেলিফোন ইত্যাদি বিলের টাকা মেটানো।
• ক্রেডিট কার্ডের টাকা জমা করা।
• ইস্যু করা কোনও চেকে ‘স্টপ পেমেন্ট’ নির্দেশ পাঠানো।
• ট্যাক্স ক্রেডিট স্টেটমেন্ট দেখে নেওয়া।
• শেয়ারের নতুন ইস্যুতে (আই পি ও) আবেদন করা।
• মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কেনার জন্য আবেদন করা।
• সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের গিফ্ট কার্ড কেনা।
• ডেবিট কার্ডের পিন নম্বরের জন্য আবেদন পাঠানো।
ব্যাঙ্কে যেতে হতে পারে শুধুমাত্র নগদ টাকা তোলা এবং জমা করার জন্য। অবশ্য পরিমাণে খুব বড় না-হলে টাকা তোলা যায় ডেবিট কার্ড (এটিএম কার্ড) ব্যবহার করেও। নেট ব্যাঙ্কিংয়ে অভ্যস্ত হয়ে গেলে কাজ হয় চটজলদি। প্রচুর সময় বাঁচে। পরিষেবা নিয়েও হতাশ হতে হয় না।
সাবধান থাকতেই হবে
জানি, এই মুহূর্তে একটা প্রশ্নই আপনাকে তুমুল ভাবিয়ে চলেছে। আর সেটা হল, নেট ব্যাঙ্কিংয়ে ঝুঁকি নেই তো? হ্যাকিং করে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও, এমন খবর তো মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। তা হলে?
এর জবাব সাবধানতা। সব সময়ে প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে সতর্ক থাকা। টাকার ব্যাগ খোলা অবস্থায় ফেলে রাখলে তো টাকা খোয়া যেতেই পারে। দরকার ভাল করে তা তালাবন্ধ করে রাখা। অ্যাকাউন্টের তালা হল পাসওয়ার্ড। তালা যত মজবুত হবে, ততই বেশি হবে সুরক্ষা। তাই এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কী ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
ক) জটিল পাসওয়ার্ড দিন। এতে অক্ষর থাকবে, সংখ্যা থাকবে এবং থাকবে চিহ্ন। যেমন, k3gi9(nx?t বা p7@io8+% ইত্যাদি। কয়েক মাস পর পর পাসওয়ার্ড পাল্টে দিলে ভাল হয়।
খ) পাসওয়ার্ড কখনওই অন্য কোনও ব্যক্তিকে জানানো যাবে না। লিখে রাখতে হবে সাঙ্কেতিক ভাষায়।
গ) কম্পিউটারের কি-বোর্ড ব্যবহার না-করাই বাঞ্ছনীয়। পাসওয়ার্ড টাইপ করার জন্য কম্পিউটার পর্দায় ভেসে ওঠা ভার্চুয়াল কি-বোর্ড ব্যবহার করুন। মাউস ব্যবহার করে আপনাকে পাসওয়ার্ড টাইপ করতে হবে। এতে সুরক্ষা অনেকটা বাড়ে। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে কি-বোর্ড থেকেই চুরি হয়ে যায় ব্যক্তিগত পাসওয়ার্ড।
ঘ) যে-অ্যাকাউন্টে নেট ব্যাঙ্কিং ব্যবহার করা হবে, সেখানে খুব বেশি টাকা ফেলে না-রাখাই ভাল। বিভিন্ন বিলের টাকা মেটানোর জন্য যত টাকা দরকার, গড়ে সেই পরিমাণ অর্থ ওই অ্যাকাউন্টে রাখলে ভাল হয়।
মোটের উপর এক হলেও বিভিন্ন ব্যাঙ্কের নেট ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় কিছু বিশেষত্ব থাকতে পারে। এই কারণে নিজের নিজের ব্যাঙ্কের নেট ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার নিয়ম-কানুন ভাল করে পড়ে বুঝে নিতে হবে। তা করা যাবে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কটির ওয়েবসাইট থেকেই।
|
লেখক ম্যাকলিওড রাসেল ইন্ডিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কোম্পানি সেক্রেটারি
(মতামত ব্যক্তিগত) |
|
|
|
|
|