লরিচালক ও পুলিশ কর্মীকে মারধরেরর অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে। বুধবার সকালে আসানসোলের ঘটনা। আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রহৃত লরিচালক ও পুলিশকর্মী। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত কাউন্সিলর অনির্বান দাস ওরফে অনিমেশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন সকালে দলবল নিয়ে অনির্বাণবাবু সেনর্যালে রোডের একটি নার্সিংহোমের সামনে দাঁড়ান। তখন সেখান দিয়ে কয়েকটি লরি যাচ্ছিল। অভিযোগ, অনির্বাণবাবু লরিগুলির গতিপথ আটকান। লরিচালকদের বলেন, লরি নিয়ে যাওয়া যাবে না। লরিচালকেরা কাউন্সিলর হিসেবে অনির্বাণবাবুকে চিনতেন না। তাঁরা প্রতিবাদ করেন। লরি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তারা। এরপরেই কাউন্সিলর ও তাঁর দলবলের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। কাছেই ছিলেন কয়েকজন পুলিশকর্মী। তাঁরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই এক জন লরিচালককে ওই তৃণমূল কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ ও তাঁর অনুগামীরা চড় থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে পুলিশকর্মীরা মারমুখী কাউন্সিলর ও তাঁর দলবলকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন এক জন পুলিশকর্মীকেও অনির্বাণবাবু নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। এরপর এলাকা থেকে সরে পড়েন তাঁরা। প্রহৃত লরি চালক ও পুলিশকর্মী আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ করেন। লরির চালক প্রতাপ সিংহ বলেন, “ওরা প্রথম থেকেই আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। কারণ জানতে চাইলে আমাকে এলোপাথাড়ি চড়থাপ্পর মারা হয়।” প্রহৃত পুলিশকর্মী মন্তব্য করতে চাননি।
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর বলেন, “লরিচালকদের সঙ্গে বচসা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু মারধরের অভিযোগ মিথ্যা।” তাঁর আরও অভিযোগ, সকাল থেকেই সেনর্যালে রোডে লরি চলাচলের জন্য ‘নো-এন্ট্রি’ লাগানো হয়। তা সত্ত্বেও এই রাস্তা ধরে একাধিক ভারি পণ্যবাহী লরি যায়। পুলিশ কিছু বলে না। তাঁর দাবি, এতে জনবহুল এই রাস্তায় মাঝেমাঝেই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ দিনও রাস্তায় ‘নো-এন্ট্রি’ বোর্ড লাগানো ছিল। তার পরেও পুলিশের সামনে দিয়ে ভারী পণ্যবাহী লরি যাচ্ছিল।
ঘটনার পরেই লরিচালক ও পুলিশের সহকর্মীরা থানায় অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি জানান। আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সুরেশকুমার চাডিয়া বলেন, “আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন এর উত্তরে সুরেশকুমার জানান, অপরাধের গুরুত্ব দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছেন। তিনি পুলিশকে অভিযোগ জানাতে পারতেন। কিন্তু ‘নো-এন্ট্রি’ বোর্ড লাগানো সত্ত্বেও পুলিশের সামনে দিয়ে ওই রাস্তা ধরে কেন ভারি পণ্যবাহী লরি চলাচলের অভিযোগ উঠল? এডিসিপি জানান, এই বিষয়টি নিয়েও বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। |