রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে চিকিৎসকদের আলাদা করে কথা বলার ব্যবস্থা চালু করল এমজেএন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার থেকে ‘পেশেন্ট পার্টি মিট’ নামের ওই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এর জন্য এই হাসপাতালের কারমাইকেল ওয়ার্ডে একটি কাউন্টার করা হয়েছে। প্রতিদিন সকালে চিকিৎসকেরা নির্দিষ্ট সময়ে ওয়ার্ডে রোগীদের দেখার পর সেখানে আসবেন। আত্মীয় পরিজনেরা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে রোগীর খোঁজ নিতে পারবেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রশ্ন ছাড়াও কোনও ওষুধ বাজারেও না পাওয়া গেলে তার বিকল্প ওষুধের নাম চিকিৎসক জানিয়ে দেবেন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা এ দিন বলেন, “রোগীর পরিজনদের সাহায্যের কথা মাথায় রেখেই এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। শীঘ্রই বিকালের দিকেও ওই পরিষেবা চালুর চেষ্টা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে অন্য হাসপাতালগুলিতে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে।” কোচবিহার ওই হাসপাতাল সুপার জয়দেব বর্মন বলেন, “রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের সঙ্গে চিকিৎসকদের সম্পর্ক ভাল হবে। অনেক ক্ষেত্রের ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো ছাড়াও ওয়ার্ডে ভিড় এড়ানো সহজ হবে।”
প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, প্রতি ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকেরা ছাড়াও শিশু, প্রসূতি, অস্থি, শল্য ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা নিয়মিত ‘পেশেন্ট পার্টি মিটে’ যাবেন। স্বাস্থ্য কর্মীরা কাউন্টারে চিকিৎসক আসবেন তা আগাম জানিয়ে দেবেন। প্রতিদিন ১০টা থেকে পর্যায়ক্রমে চিকিৎসকেরা আসবেন। বৃহস্পতিবার প্রথম দিন শিশু প্রসূতি, অস্থি বিশেষজ্ঞ অংশ নেবেন। শুক্রবার শল্য, শিশু, প্রসূতি বিভাগের চিকিসকরা উপস্থিত ছিলেন। কাউন্টারগুলিতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ৪০০ শয্যার হাসপাতালটি সবসময়ই রোগীর ভিড়ে ঠাসা থাকে। অনেকেই জটিল এবং গুরুতর অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। অধিকাংশ সময়ই রোগীর আত্মীয়েরা চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ভিড় করেন। এতে অনেক সময়ই চিকিৎসকদের ওয়ার্ডে সমস্যা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি, পরিজনেরাও চিকিৎসার খুঁটিনাটি জানতে পারেন না বলে অভিযোগ তোলেন। এতে ভুল বোঝাবুঝি হয়।
সম্প্রতি চিকিৎসার অবহেলায় এক কিশোরীর মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পেশেন্ট পার্টি মিটে চিকিৎসকের পাশাপাশি রোগীর আত্মীয়দের নাম-সব যাবতীয় তথ্য লিপিবদ্ধ থাকবে। এতে চিকিৎসকের দেখা মেলেনি বা তিনি কিছু জানাননি যাতীয় অভিযোগ অনেকটাই এড়ানো যাবে বলে চিকিৎসকেরা মনে করছেন। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ নভোনীল চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, “খুবই ভাল উদ্যোগ। ওয়ার্ডে একসঙ্গে অনেকের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রে ভুলভ্রান্তি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই ক্ষেত্রে তা হবে না।” |