|
|
|
|
জল-সঙ্কট মোকাবিলায় বরাদ্দ জেলা পরিষদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গরম পড়তেই জেলা জুড়ে জল-সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কোথাও জলস্তর নেমে গিয়ে নলকূপে জল উঠছে না। কোথাও বা নলকূপ অচল হয়েছে। ফলে, সমস্যায় পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় অর্থ চেয়ে জেলা পরিষদের কাছে দরবার করেছিল পঞ্চায়েত সমিতিগুলো। পরিস্থিতি দেখে ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতির জন্য প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করল জেলা পরিষদ। জানা গিয়েছে, বরাদ্দ অর্থে অচল নলকূপ মেরামতও করতে পারে পঞ্চায়েত সমিতি। তবে তার আগে পঞ্চায়েত সমিতিতে আলোচনা করতে হবে। গ্রামাঞ্চলে পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা আসে জেলা পরিষদের কাছে। সেই টাকা থেকেই এই বরাদ্দ। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “জেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু নলকূপ অচল হয়ে গিয়েছে। ফলে, জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেগুলো মেরামতের প্রয়োজন। দ্রুত যাতে কাজ হয়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের উপর দিয়ে চলে গিয়েছে কংসাবতী এবং সুবর্ণরেখা নদী। সাধারণত, নদীর পাশের গ্রামগুলোয় জলের সমস্যা থাকে না। তবে, এ বার নদীর পাশের একাংশ গ্রামেও জল-সঙ্কট দেখা দিয়েছে। যেমন, খড়্গপুর-১ ব্লকের বড়কোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে রয়েছে জিনশহর, বালিহাটি, মোহনপুর, উত্তর সিমলা প্রভৃতি গ্রাম। পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে কংসাবতী নদী। অথচ, গ্রামের নলকূপগুলোয় সব সময় জল ওঠে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা আরও জটিল হয়। জেলায় যে সংখ্যক নলকূপ রয়েছে, তার একাংশ অচল। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, জেলায় মোট ৩১ হাজার ২৬৭টি নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে সচল ২২ হাজার ২১৩টি। অচল ৯ হাজার ৫৪টি। এর মধ্যে জলস্তর নীচে নেমে যাওয়ার ফলে জল ওঠে না ১ হাজার ৬০৮টি নলকূপে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় নতুন নলকূপ তৈরির উপরও জোর দেওয়া হয়। গত আর্থিক বছরে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে ৯০০টি নলকূপের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে ৬৬৬টির কাজ হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ চলছে। গত আর্থিক বছরে জেলার জন্য নলবাহিত জল প্রকল্প মঞ্জুর হয়েছিল ১৮৮টি। ১২৭টির কাজ হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ চলছে।
জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, তিনটি প্রকল্পের মোট ৪৮ লক্ষ ৫৪ হাজার ৬৩৩ টাকা ছিল জেলা পরিষদের কাছে। এর মধ্যে ২৬ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা প্রয়োজন নলবাহিত জল প্রকল্পের জন্য। যে প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে এগিয়েছে। বাকি টাকা থেকেই জেলার ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতির জন্য ১৯ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কোনও পঞ্চায়েত সমিতির জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। কোথাও ৫০ হাজার। জানা গিয়েছে, কেশপুর এবং নারায়ণগড়এই দু’টি পঞ্চায়েত সমিতির জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১ লক্ষ টাকা করে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বলেন, “বিভিন্ন এলাকায় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে খবর পাচ্ছি। গ্রামে নলকূপ রয়েছে। অথচ, জল উঠছে না। দ্রুত জলস্তর নেমে যাওয়ার ফলে এই পরিস্থিতি।” তাঁর কথায়, “বেশ কিছু নলকূপ মেরামত করা জরুরি। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতিগুলোতে আলোচনা করে কাজ এগোবে। অচল নলকূপগুলো মেরামত করা হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।” |
|
|
|
|
|