দলেরই মেয়রের বিরুদ্ধে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে চন্দননগর পুরসভার এক কাউন্সিলর পদত্যাগ করলেন।
সম্প্রতি চন্দননগর পুর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, বোরো চেয়ারম্যানদের কাছে নয়— এ বার থেকে সরাসরি পুরসভায় গৃহ নির্মাণ ও অন্যান্য নানা বিষয়ের দরখাস্ত জমা নেওয়া হবে। এর বিরুদ্ধেই মুখ খুলেছেন দলের বোরো চেয়ারম্যান মোহিত নন্দী। তিনি বলেন, “চেয়ারম্যানদের এড়িয়ে পুর কর্তৃপক্ষ সরাসরি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের নতুন পদক্ষেপ করে আসলে মেয়র দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দিচ্ছেন। এর বিরুদ্ধেই আমি প্রতিবাদ করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিই।” বৃহস্পতিবার তিনি তার পদত্যাগপত্র পুরসভার মেয়ররের দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
মোহিতবাবুর আরও অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তের বলে বরোর চেয়ারম্যদের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। পুরসভা-সংক্রান্ত অধিকাংশ কাজ সরাসরি হয়ে যাচ্ছে। বোরো চেয়ারম্যানদের আর কোনও ভূমিকাই থাকবে না। ফলে পুরসভার নানা অনিময় অনায়াসেই হয়ে যাবে। এর আগে প্রচলিত রীতি অনুসারে বরোর অন্তর্ভূক্ত বহুতল ফ্ল্যাটবাড়ি অথবা সাধারণ মানুষের বাড়ির নকশাগুলি বরোতে জমা দেওয়া হত। তারপর সেইগুলি অনুমোদনের জন্য পুরসভায় পাঠানো হত। এরপর সেই নকশা-সংক্রান্ত ফাইল ফের বরো দফতরে ফেরত আসত। কোনও অনিয়ম থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তি বা দফতরে তা ফেরত পাঠিয়ে সংশোধন করতে বলা হত। কিন্তু নতুন নিয়মে সেই পাশ হওয়া ফাইল বরো দফতরে আসা বন্ধ হয়ে যাবে। আর এতেই অবৈধ কাজে বৈধতার শিলমোহর পড়ে যাবে বলে ওই কাউন্সিলর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। মোহিতবাবুর অভিযোগ, এর ফলে অবৈধ নির্মাণ কাজের সংখ্যা বেড়ে যাবে। পুরসভার কাজে অসাধু ব্যক্তিরা প্রশ্রয় পাবেন।
পুরসভার মেয়র রাম চক্রবর্তী অবশ্য এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন,“কারওর ক্ষমতা খর্ব বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। যিনি বলছেন, তিনি ওই সিদ্ধান্ত কোনও ভাবে ভুল বুঝছেন।” ওই সিদ্ধান্তের মেয়রের ব্যাখ্য, “দল তথা রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দ্রুত সাধারণ মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিতে হবে। সেই কাজে কোনও দীর্ঘসূত্রিতা চলবে না। এর আগে যে পদ্ধতিতে কাজ হত, তাতে অনেক সময় লাগত। মানুষের হয়রানি হত। তাই নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” |