ফ্ল্যাট বিক্রির নামে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার হলেন শ্রীরামপুরের প্রোমোটার। চুক্তি করে টাকা নিয়েও তিনি ফ্ল্যাট দেননি বলে অভিযোগ। বলরাম নাগ নামে ওই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেছিলেন বুদ্ধদেব ঘোষ নামে ওই বিজ্ঞানী। আদালতের নির্দেশে পুলিশ বলরামকে গ্রেফতার করেছে। বলরামের বাড়ি শ্রীরামপুরের তারাপুকুরে। তাঁর ভাই শ্রীরামপুর পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর।
বুদ্ধদেববাবু কাজ করেন ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিউটে। শ্রীরামপুরের ঠাকুরদাস বাবু লেনে ওই প্রোমোটারের কাছ থেকে একটি ফ্ল্যাট কিনবেন বলে ঠিক করেন তিনি। রেজিস্ট্রি বায়না করে কয়েক লক্ষ টাকা সংশ্লিষ্ট প্রোমোটারকে দেন বুদ্ধদেববাবু। অথচ ফ্ল্যাটের মালিকানা পাননি। অভিযোগ, বার বার তদ্বির করেও কোনও ফল হয়নি। আবেদনে কাজ না হওয়ায় হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা দায়ের করেন বুদ্ধদেববাবু। বছর খানেক আগে মামলার রায়ে ওই ফ্ল্যাটের মালিকানা বুদ্ধদেববাবুর হাতে তুলে দিতে ওই প্রোমোটারকে নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ ও আদালত সূত্রের খবর, বলরাম ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে আপিল মামলা করেন। বুদ্ধদেববাবুর আইনজীবী সমর ঘোষ জানান, সেই মামলাও ওই আদালত খারিজ করে দেয়। এর পরেও ওই প্রোমোটার ফ্যাটের মালিকানা বুদ্ধদেববাবুকে দিচ্ছিলেন না। তখন হুগলি ক্রেতা সুরক্ষা আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পুলিশ জানাচ্ছে, গ্রেফতারি এড়াতে গা-ঢাকা দেন বলরাম। কয়েক মাস ধরে পালিয়ে বেড়ান। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার দুপুরে বৈদ্যবাটি নিমাইতীর্থ রোড এলাকা থেকে ওই প্রোমোটারকে গ্রেফতার করেন শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। ওই দিনই ধৃতকে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের প্রধান বিচারক নারায়ণচন্দ্র চক্রবর্তীর সামনে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগেও একাধিক বার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে বলরামের বিরুদ্ধে। টাকা দিয়ে ফ্ল্যাটের মালিকানা না দেওয়া, হুমকি দেওয়ার মতো অভিযোগও রয়েছে। বছর খানেক আগে চন্দননগরের এক বৃদ্ধ প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর বিরুদ্ধে। এক বছর আগে নাইন এম এম পিস্তল-সহ ওই প্রোমোটারকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কয়েক বছর ধরে প্রোমোটারি ব্যবসায় বাড়বাড়ন্ত ছিল বলরামের। শহরে একের পর এক ফ্ল্যাট তৈরি হয়েছে তাঁর হাতে। বেশ কিছু ক্ষেত্রেই ফ্ল্যাটের মালিকানা দেওয়ার চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর নিজস্ব দুষ্কৃতী বাহিনী ছিল বলেও অভিযোগ। প্রথম দিকে অবশ্য রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পায়নি। |