টানা ৫ বছর ধরে বন্ধ ছিল শিশুদের সাধের উদ্যান। ওই সময়ের মধ্যে ‘তারশঙ্কর সব পেয়েছির আসর’-এর শিশুদের খেলতে হয়েছে স্টেশনের পাশে একখণ্ড পরিত্যক্ত মাঠে। আমোদপুর-কাটোয়া ছোট লাইনের ট্রেন পথের যাত্রা বন্ধ করে ব্রডগেজ লাইনের কাজ শুরু হওয়ায় ওই একখণ্ড মাঠও শিশুদের কাছ থেকে চলে যায়। অবশেষে লাভপুর স্টেশন লাগোয়া তাদের সাধের উদ্যান ফের ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত তারা। বন্ধ ওই শিশু উদ্যান সরকারি ভাবে খুলে দেওয়া হয় গত ১৫ এপ্রিল। ওই উদ্যানের এক পাশে গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছে তীরন্দাজি প্রশিক্ষণ শিবির। |
ওই উদ্যানের ইতিকথা অনেকটা অস্কার ওয়াইল্ডের ‘স্বার্থপর দৈত্যের’ বাগানের মতো। ১৯৬১ সালে লাভপুরের বাসিন্দা ক্ষীরোদ মুখোপাধ্যায়ের দান করা এক জায়গার উপরে গড়ে উঠেছিল শিশু উদ্যানটি। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ঝড় লেগেছিল উদ্যানটিতে। ফলে প্রায় ৫ বছর আগে সেই উদ্যান নতুন করে উদ্বোধন হয়েই গেটে তালা পড়ে যায়। অনেক আবেদন-নিবেদনে টনক নড়ে সরকারি কর্তাব্যক্তিদের। গত ১৫ এপ্রিল বিডিও-র প্রতিনিধি হিসেবে ত্রাণ আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় মুখোপাধ্যায় ওই উদ্যানের বন্ধ গেটের তালা খুলে দেন। চাবি দিয়ে যান স্থানীয় ‘বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনীকে’। পরে লাভপুর ১ পঞ্চায়েত উদ্যানের জঙ্গল পরিষ্কার করে দেয়। স্বাভাবিক ভাবে উদ্যানে যেন ওই বসন্ত নেমে আসে।
তারাশঙ্কর সব পেয়েছির আসর-এর শিশুরা তো খেলাধুলো করছেই, পাশাপাশি রাজ্য সরকারের যুব কল্যাণ দফতরের তত্বাবধানে বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনী ৮-১৪ বছরের শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য ১ বছরের তিরন্দাজি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করেছে। ওই শিবিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতি উপস্থিত ছিলেন সিপিএম নেতা তথা লাভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নদেরচাঁদ বাগদি। তিনি বলছেন, “কেন এত দিন উদ্যান বন্ধ ছিল সেই বিতর্কে যাচ্ছি না। তবে ভাল লাগছে শিশুদের খেলাধুলো দেখে।” আর যাদের মাঠ সেই ‘তারশঙ্কর সব পেয়েছির আসর’-এর সুদীপা, রত্নার্ঘ্য, প্রিয়া, জাহাঙ্গিরদের প্রতিক্রিয়া, “দীর্ঘদিন আমাদের মাঠ বন্ধ থাকায় এখানে-এখানে খেলতে হয়েছে। পরে রেল একটা মাঠ নিয়ে নিল। আমাদের পুরনো মাঠ ফিরে পেয়ে ভালই লাগছে।” |