কোথায় ভিয়েতনামের সাইগন এফ সি! এ এফ সি চ্যালেঞ্জার্স কাপে খেলতে নামার আগের দিন ‘যুদ্ধ’ বেধে গেল ইস্টবেঙ্গল ‘গোলকিপার’ এডে চিডির সঙ্গে ‘স্ট্রাইকার’ উগা ওপারার!
সোমবার সকালে যুবভারতী স্টেডিয়ামের তিন কাঠির নীচে দাঁড়িয়ে গেলেন কিপার চিডি। উগা ওপারাকে চ্যালেঞ্জ জানালেন, পেনাল্টি থেকে গোল করার জন্য। লাল-হলুদের নাইজিরিয়ান ডিফেন্ডার আবার পালটা চ্যালেঞ্জ জানালেন ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকারকে! তবে উগার মারা শটটা শেষ পর্যন্ত বারে লেগেই ফিরে এল। ‘জয়ের আনন্দে’ হাততালি দিয়ে ওঠেন চিডি। ব্যাপারটা প্রতীকী হতে পারে আজ মঙ্গলবারের ম্যাচের আবহাওয়ার সঙ্গে। এ এফ সি কাপের গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচ খেলতে নামার আগে যাকে বলে একেবারে ‘ফিল গুড’ পরিবেশ।
হবেই বা না কেন? এই টুর্নামেন্টে ইতিমধ্যেই নক-আউট পর্বে পৌঁছে গেছেন চিডি-পেনরা। তবে ঘরের মাঠে ভিয়েতনামের দলের বিরুদ্ধে চিডিদের সামনে অবশ্য অন্য অঙ্ক রয়েছে। আর তা হল, প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যাচে ঘরের মাঠে খেলার সুযোগের ছাড়পত্র আদায়ের ‘যুদ্ধ’! |
গ্রুপ শীর্ষে থাকতে পারলে তবেই শেষ ষোলোর লড়াইয়ে ঘরের মাঠে খেলার সুযোগ পাবে ট্রেভর মর্গ্যানের ইস্টবেঙ্গল। আর সে জন্য সঞ্জু-নওবাদের চাই এক পয়েন্ট। ইস্টবেঙ্গলের সাহেব কোচ অবশ্য চাইছেন, পুরো পয়েন্টই। “আমাদের লক্ষ্য এক নয়। তিন পয়েন্ট। সেই লক্ষ্যে নামব আমরা,” বলে দিয়েছেন মর্গ্যান। কোচের সঙ্গে একমত নতুন হেয়ার স্টাইল নিয়ে হাজির পেন ওরজিও। বলছিলেন, “জিতেই গ্রুপের শীর্ষে যেতে চাই।”
বৈশাখের কাঠ-ফাটা গরম। তাপমাত্রা একচল্লিশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। গরমে একেবারে নাজেহাল অবস্থা সাইগন এফসি’র। তার ওপর কৃত্রিম ঘাসের মাঠে খেলতে একেবারেই অভ্যস্ত নয় ভিয়েতনামের দলটি। সিঙ্গাপুরের ট্যাম্পাইন রোভার্সের বিরুদ্ধে এক বারই কৃত্রিম ঘাসের মাঠে খেলেছে দলটি। সেই মাঠ অবশ্য সল্টলেকের তুলনায় অনেক ভাল। ফলে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে নামার আগের দিন অনুশীলনে বেশ সমস্যাতেই পড়তে হল সাইগনকে। সহকারী কোচ নগুয়েন বলছিলেন, “আমাদের ওখানে খুব বেশি হলে তাপমাত্রা ২৯ ডিগ্রির আশেপাশে থাকে। এই গরমে সত্যিই সমস্যা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কৃত্রিম ঘাসের মাঠে খেলতেও অভ্যস্ত নই।”
তবে এই গরম আর কৃত্রিম ঘাসের মাঠে খেলার সুবিধাকেই চিডিরা প্লাস পয়েন্ট বলে মনে করছেন। অনুশীলনের পর সঞ্জু প্রধান বলছিলেন, “সিঙ্গাপুরের মাঠ এখানকার চেয়ে অনেক ভাল। এই গরমে যুবভারতীর কৃত্রিম ঘাসের মাঠে খেলা সহজ হবে না সাইগনের।” ট্রেভর মর্গ্যান অবশ্য ফুটবলারদের মতো হালকা ভাবে নিচ্ছেন না সাইগনকে। বললেন, “ভাল দল। ফরোয়ার্ড লাইন তো বেশ ভাল। সতর্ক না হলে সমস্যা হবে।” |
ইস্টবেঙ্গল অনুশীলনে মর্গ্যান। সোমবার। |
মরসুমের শেষে এসে লাল-হলুদের রক্ষণ যেন কিছুটা ‘আউট অফ ট্র্যাক’ হয়ে গেছে। শেষ কিছু ম্যাচে বিশ্রী গোল খেয়েছেন ওপারারা। এর ওপর চোটের জন্য খাবড়া নেই। মাঝমাঠের প্রাণভ্রোমরা মেহতাবও খেলতে পারছেন না কার্ড সমস্যার কারণে। ওদের জায়গায় সম্ভবত নওবা এবং লোবো খেলবেন।
চোট ও কার্ড সমস্যায় বেহাল সাইগন এফ সি-ও। সাইগনের প্রথম একাদশের তিন-চার ফুটবলার নেই চোটের জন্য। এর মধ্যে আবার দু’জন বিদেশি। তবে উগান্ডার জাতীয় দলের ফুটবলার মোসেসের না থাকাটা লাল-হলুদকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাচ্ছে।
চার বিদেশিকেই প্রথম থেকে খেলাচ্ছেন মর্গ্যান। চিডি-বরিসিচকে সামনে রেখে টিম সাজাচ্ছেন তিনি। সাইগনও বসে নেই। এই জুটিকে আটকানোর আলাদা স্ট্র্যাটেজি থাকছে তাদের। নগুয়েন সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তো পরিষ্কার বলে দিলেন, “ইস্টবেঙ্গলের ফরোয়ার্ড লাইন খুব শক্তিশালী। আমরা সেটা মাথায় রাখছি।”
|
মঙ্গলবারে এ এফ সি কাপে
ইস্টবেঙ্গল: সাইগন এফ সি (যুবভারতী ৪-৩০)। |
পুরনো খবর: শেষ ষোলোয় লাল-হলুদ |