লেওয়ানডস্কিকে ফাউল করেও আটকাবেন রোনাল্ডোরা
দশ বছরের মধ্যে এটাই রিয়ালের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ: মোরিনহো
বের্নাবৌতে স্বপ্নের প্রত্যাবর্তন ঘটানো রিয়াল মাদ্রিদের কাছে নতুন কিছু নয়। কিন্তু ৩০ এপ্রিল, ২০১৩ ‘লস ব্লাঙ্কোস’দের কাছে হয়তো চির ঐতিহাসিক দিন হয়ে থাকবে, যদি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোরা বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিরুদ্ধে গত বুধবারের ১-৪ ব্যবধানকে মুছে ফেলে মাদ্রিদের মাঠ থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে উঠতে পারেন। তার জন্য হোসে মোরিনহোর টিমের মঙ্গলবার রাতে দরকার ন্যূনতম ৩-০ জয়।
মোরিনহোর ‘দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান’ নামটা নিজেরই নিজেকে দেওয়া। পোর্তো আর ইন্টার মিলানের পর ইউরোপের তৃতীয় ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ দেওয়ার বিরল নজির গড়া থেকে বছর পঞ্চাশের পর্তুগিজ ফুটবল কোচ মাত্র দু’ম্যাচ দূরে। কিন্তু জার্মান প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কালকের ফিরতি সেমিফাইনাল মোরিনহোর সামনে বোধহয় কোচিং জীবনের সবচেয়ে দুর্গম পাহাড়। সেটাই একটু ঘুরিয়ে রিয়াল-বস বলেছেন, “রিয়াল মাদ্রিদের কাছে গত দশ বছরের কঠিনতম ম্যাচ এটা। প্রত্যেকটা মিনিট ধরে-ধরে, প্রতিটা গোল ধরে-ধরে বের্নাবৌতে রিয়াল খেলবে।” সঙ্গে নিজস্ব কায়দায় নিজের দলকে তাতাতে বলেছেন, “প্রথম লেগে সিগন্যাল ইডুনা পার্কে না বেরিয়ে আমাদের উচিত ছিল লেওয়ানডস্কিকে ফাউলটাউল করেও আটকানো। পোলিশ স্ট্রাইকারের সঙ্গে শারীরিক লড়াইয়ে সে দিন আমাদের ছেলেরা পিছিয়ে ছিল। যে ছেলেটা একাই চার গোল করল তার বিরুদ্ধে বড্ড সরল, নরমসরম ফুটবল খেলেছি আমরা।” স্পষ্ট ইঙ্গিত, ঘরের মাঠে ফিরতি লড়াইয়ে লেওয়ানডস্কিরা রিয়ালের প্রচণ্ড কাঠিন্যের সামনে পড়তে চলেছেন। সেটা রোনাল্ডোদের মননের সঙ্গে সঙ্গে খুব সম্ভবত শারীরিক কাঠিন্যও।
রোনাল্ডোর অবস্থা আবার এই মরণবাঁচন ম্যাচের প্রাক্কালে ঠিক উলটো। রিয়ালের কাছ থেকে বের্নাবৌতে মঙ্গলবার বিশেষজ্ঞরা যেখানে শারীরিক ফুটবল দেখতে পাওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা দেখছেন, সেখানে রিয়ালের সেরা অস্ত্র রোনাল্ডো শারীরিক-মানসিক দু’ভাবেই বিদ্ধ! শারীরিক তাঁর উরুর পেশিতে চোট। যদিও সেটা মোরিনহোর কথায়, “একদম ফিট।” সিআর সেভেন সোমবার পুরোদমে ট্রেনিংও করেছেন। ওয়াকিবহাল মহলের খবর, বের্নাবৌতে শুরু থেকেই খেলবেন। তবে সদ্য ফিট হয়ে ওঠা রোনাল্ডোকে গত সপ্তাহে মিউনিখের আলিয়াঞ্জ এরিনায় বায়ার্নের বিপক্ষে অপর সেমিফাইনালের প্রথম লেগে সবে চোট সারিয়ে নামা মেসির মতোই অতিমন্থর লাগবে কি না সেটা সময়ই বলবে।
এই মুহূর্তে যেটা রোনাল্ডো-সমাচার, সেটা কিন্তু রিয়াল পাওয়ার হাউসের পুরো মানসিক সম্পর্কিত। সাতাশ বছর বয়সি ব্রাজিলিয়ান সুন্দরী আন্দ্রেসা-র (‘পেজ থ্রি’ দুনিয়ার মিস বাম বাম নামেও খ্যাত) সঙ্গে রোনাল্ডো নাকি ডর্টমুন্ডের বিরুদ্ধে প্রথম লেগ ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টামাত্র আগে ‘উত্তেজক রাত’ কাটিয়েছেন। যা জানার পর রোনাল্ডোর মডেল-বান্ধবী ইরিনা চটে লাল। সব মিলিয়ে ফুটবলজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ঠিক আগে মানসিক স্থিতি টলে যাওয়ার জোগাড় সিআর সেভেনের। স্বয়ং মিস বাম বাম-এর চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি লন্ডনের যে সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে, সেই ’দ্য সান’-য়েই প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছেন রোনাল্ডো। সঙ্গে নিজের সরকারি টুইটার অ্যাকাউন্টে রোনাল্ডোর পোস্ট, ‘আমাকে জানানো হয়েছে ‘দ্য সান’ ওদের সম্পাদকীয়তে সততার পরিচয় রাখবে। আর একটা লেখা প্রকাশিত হবে, যেখানে কোনও এক আন্দ্রেসার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা হবে। কেউ নিজে প্রচারের আলোয় চড়ার উদ্দেশ্যে আমাকে সিঁড়ি বানাচ্ছে। আমি গোটা পরিস্থিতিতে ভীষণ বিরক্ত। আমার ব্যক্তিগত জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিজের দলের এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগের দিন এ রকম কেন রটছে সেটা আমার কাছে রহস্য। গোটাটাই গল্প।”
রিয়াল সমর্থকেরা অবশ্য ‘গল্পকথা’ নয়, রূপকথা দেখার জন্য অধীর আগ্রহী বের্নাবৌতে। মঙ্গলবার ম্যাচ শুরুর আগে বের্নাবৌর গ্যালারি জুড়ে শোনা যাবে একটা ভিডিও গর্জন ‘আপনি, আপনারাই আমাদের আসল শক্তি। আসুন, পরের নব্বই মিনিট আমাদের জন্য সারাক্ষণ গলা ফাটান।’ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ন’বারের চ্যাম্পিয়ন, বারো বারের ফাইনালিস্ট রিয়াল মাদ্রিদের ঘরের মাঠে সমর্থকদের তাতাতে আর নিজেরাও তাততে এ রকম ‘ভিডিও রিপ্রেজেন্টেশন’-এর অতীত নজির নেই!
তেরোতম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের মুখ দেখাটা রিয়ালের কাছে এখন বড়ই বালাই! ‘আনলাকি থার্টিন’কেই এখন মাদ্রিদ জুড়ে ‘লাকি চ্যাম্প’ করে তোলার মরণপণ চেষ্টা!

• বের্নাবৌতে স্বপ্নের কামব্যাক •
রিয়াল মাদ্রিদ-ইন্টার মিলান (৮৪-৮৫ উয়েফা সেমিফাইনাল)
• সান সিরোতে ০-২ হেরে ফিরতি ম্যাচে ঘরের মাঠে ৩-০ জেতে রিয়াল। ফাইনালে ওঠে ৩-২ সার্বিক স্কোরে।
রিয়াল মাদ্রিদ-বরুসিয়া মোনসেনগ্ল্যাডব্যাক (৮৫-৮৬ উয়েফা কাপ প্রি-কোয়ার্টার)
• জার্মানিতে ১-৫ হারের পর বের্নাবৌতে ফিরতি ম্যাচ ৪-০ জেতে রিয়াল। শেষ আটে ওঠে অ্যাওয়ে গোলের ভিত্তিতে।
রিয়াল মাদ্রিদ-আন্ডারলেখট (৮৪-৮৫ উয়েফা কাপ প্রি-কোয়ার্টার)
• প্রথম পর্বে বেলজিয়ামে ০-৩ হারে রিয়াল। কিন্তু ঘরের মাঠে ৬-১ জিতে সব মিলিয়ে ৬-৪ স্কোরলাইনে শেষ আটে যায় রিয়ালই। হ্যাটট্রিক করেন বুত্রাগুয়েনো।
মোরিনহো কি পারবেন? রিয়াল মাদ্রিদ-রেড স্টার বেলগ্রেড (৮৬-৮৭ ইউরোপিয়ান কাপ কোয়ার্টার ফাইনাল)
• প্রথম লেগে ২-৪ হারে রিয়াল। বের্নাবৌতে দ্বিতীয় লেগে ২-০ জিতে অ্যাওয়ে গোলের ভিত্তিতে রিয়ালের বাজিমাত।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.