মমতা-অধীর দ্বন্দ্বই কারণ বলে সন্দেহ
ডানকুনি-ফুরফুরা শরিফ রেল প্রকল্প ঘিরে প্রশ্ন
গ্রামবাসীরা জমি দিতে রাজি। বরাদ্দ টাকা পড়ে রয়েছে। কোথাও কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভও নেই। তা সত্ত্বেও, জট পাকিয়েছে ডানকুনি-ফুরফুরা শরিফ রেল প্রকল্পে।
প্রকল্পটি আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেননা, গত বছরের মাঝামাঝি জমি অধিগ্রহণ থেকে হাত গুটিয়ে নেয় রেল। সম্প্রতি তারা সরিয়ে নিয়েছে প্রকল্পের ঠিকাকর্মীদেরও।
কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন, জমি রাজ্য সরকারকেই অধিগ্রহণ করতে হবে। জমি পেলে রেল ফের কাজ শুরু করবে। ওই প্রকল্পের কাজে যুক্ত রেলের এক কর্তা বলেন, “রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে কি না, তা আমাদের স্পষ্ট করে জানাক। তবেই, পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। চণ্ডীতলার সাইট-অফিসে শুধু শুধু ঠিকা-কর্মীদের বসিয়ে রাখার মানে হয় না। তাই তাঁদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
২০০৯ সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মস্থান ফুরফুরা শরিফকে শৈব্যতীর্থ তারকেশ্বরের সঙ্গে যুক্ত করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই সময় তাঁর আশঙ্কা ছিল, এ রাজ্যে আর পাঁচটা শিল্পের মতো ডানকুনি-ফুরফুরা রেল প্রকল্পের ক্ষেত্রেও জমি বাধা হয়ে দাঁড়াবে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি জমিদাতা প্রতিটি পরিবারকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা করেন। সে কারণে জমি দিতে প্রবল উৎসাহ ছিল সংশ্লিষ্ট এলাকায়। জমি দিতে চেয়ে প্রায় সাড়ে ছ’শো গ্রামবাসী সম্মতিপত্র দেন রেলকে। ১১৫ জন চাকরির নিয়োগপত্রও পান।
ফের কবে কাজ শুরু হবে তা নিয়েই দেখা দিয়েছে সংশয়। ছবি: দীপঙ্কর দে।
রেল সূত্রের খবর, মোট ১৯.৫ কিলোমিটার নতুন রেলপথের জন্য বরাদ্দ হয় ১০০ কোটি টাকা। প্রকল্পে ২৫৪ একর জমির প্রয়োজন ছিল। রেল ৫৫ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করে। ফুরফুরা থেকে কল্যাণবাটি পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার এলাকায় রেললাইন পাতার কাজে মাটি ফেলে জমি উঁচু করে ঠিকাদার সংস্থা। ফুরফুরায় স্টেশন তৈরির কাজেও হাত দেয় সংস্থাটি। কিন্তু গত বছরের মাঝামাঝি আচমকাই জমি অধিগ্রহণ থেকে সরে দাঁড়িয়ে ওই কাজের দায়িত্ব রাজ্যের উপরেই চাপায় রেল। সেই সময় রেলমন্ত্রী ছিলেন মুকুল রায়। তাই ওই প্রকল্প নিয়ে জটিলতায় তৃণমূলেরও ভূমিকা রয়েছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধরনা। এরপরই প্রকল্পটির কাজে ভাটা পড়ে। এ বার সরানো হল ঠিকাকর্মীদেরও।
জমি নিয়ে সমস্যা না হলে ‘সমস্যা’ কোথায়? প্রকল্পের জন্য আশায় থাকা তারকেশ্বর এবং ফুরফুরার বহু মানুষ বলছেন, “সমস্যাটা পুরোপুরি রাজনৈতিক।” তাঁরা মনে করছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অধীর চৌধুরীর ‘দ্বৈরথেই’ প্রকল্পটি আটকেছে। তাঁদের ধারণা, রেলের দায়িত্বে না থাকলেও প্রকল্পটি হলে তার ফায়দা তুলবে তৃণমূল। কিন্তু প্রকল্পটি না হলে, তারা প্রতিশ্রুতিভঙ্গের দায়ে পড়বে। সে জন্যই কংগ্রেসের দায়িত্বে থাকা রেলমন্ত্রক অনীহা দেখাচ্ছে প্রকল্পটি নিয়ে। এলাকার তৃণমূল নেতা সুবীর মুখোপাধ্যায়ও বলছেন, “জমি নিয়ে জট ছিল না। রাজনৈতিক কারণে এখন প্রকল্পের সম্ভাবনা নষ্ট করে দিচ্ছেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী।”
তবে অধীরবাবুর দাবি, জমি নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা জমিদাতাদের রেলে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি। তিনি বলছেন, “আগে যাঁরা রেলের দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা চাকরি দেবেন বলেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে রেলে অত চাকরি কী ভাবে দেওয়া যাবে? কোনও সুযোগ নেই রেলে অত চাকরি দেওয়ার।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.