কুণালকে ডেকে পাঠিয়ে ঘণ্টা দুয়েক জিজ্ঞাসাবাদ
বশেষে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করল বিধাননগর কমিশনারেট। সোমবার সন্ধে ছ’টা থেকে পৌনে দু’ঘণ্টা ধরে চলে এই পর্ব। পরে কুণাল জানান, “আমি যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত।” জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরনোর পর তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান যুব কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা।
সারদা কাণ্ডের সঙ্গে একাধিক তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীর জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন তাঁর চিঠিতে কুণাল ছাড়াও আরও সাংসদ ও নেতার নাম জানিয়েছেন। জেরার মুখে তিনি তৃণমূলের পাঁচ নেতা-মন্ত্রীর নাম জানান বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। সে দিক থেকে সোমবারই প্রথম শাসক দলের কোনও নেতা-সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে আসছেন কুণাল। —নিজস্ব চিত্র
প্রশাসন সূত্রে বলা হচ্ছে, সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে যে মামলা হয়েছে, তাতে আগামী বৃহস্পতিবারেই হলফনামা দিতে হবে সরকারকে। এবং তার পর দিন, ৩ মে-ই আবার শুনানি রয়েছে। সে দিন এই নিয়ে নিজেদের মত জানাতে পারে হাইকোর্ট। প্রশাসনের একাংশ বলছে, তার আগে কমিশনারেটের তদন্ত এগোচ্ছে, তা দেখানোর তাগিদ রয়েছে শাসক দলের। কুণালকে জিজ্ঞাসাবাদও তারই অঙ্গ বলে মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, আরও একটি তাগিদও রয়েছে দলীয় নেতৃত্বের। তা হল কুণাল নিয়ে দলের মধ্যে জমে ওঠা ক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমন করা। ঘটনাচক্রে ৩ মে হাইকোর্টে শুনানির দিনই ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে তৃণমূলের জেনারেল কাউন্সিলের সভা। সেখানে দলের সাংসদ-বিধায়কেরাও থাকবেন। সেখানে কুণালকে জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনা উল্লেখ করে বোঝানো হতে পারে, আইন আইনের পথে চলবে।
এ দিন বিকেলে ফোন করে ডাকা হয় কুণালকে। সন্ধে ৬টা নাগাদ তিনি গোয়েন্দা-প্রধান অর্ণব ঘোষের ঘরে ঢোকেন। কী জানতে চাওয়া হয় কুণালের কাছে? এক পুলিশকর্তা বলেন, “যে হেতু সিবিআইকে লেখা চিঠিতে ওই সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন সুদীপ্ত এবং ওই চিঠি তদন্তের আওতায় এসেছে, তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।” কিন্তু বিধাননগরের গোয়েন্দা-প্রধানের দাবি, সুদীপ্তর ওই চিঠির ভিত্তিতে নয়, কমিশনারেটে মামলার সূত্রেই তৃণমূল সাংসদকে ডাকা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই সংস্থার পিএফ ও বেতন সংক্রান্ত কিছু বিষয় নিয়ে কুণালকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কুণালের দাবি, সারদার ব্যবসা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি তিনি জানতেন না। তা হলে কেন তিনি সংস্থাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেননি, তা-ও কুণালের কাছে জানতে চান তদন্তকারীরা। পুলিশ বলছে, সারদা গোষ্ঠীর ব্যবসায় ভরাডুবির জন্য কুণাল কতটা দায়ী, বা আদৌ দায়ী কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত হতে চাইছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। এক পুলিশকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে কুণাল যে সব তথ্য দিয়েছেন, তা নিয়ে পাল্টা জেরা করা হবে সুদীপ্ত সেনকে।
এ দিন একাই বিধাননগর কমিশনারেটে এসেছিলেন কুণাল। হাতে ছিল বেশ কয়েকটি ফাইল। কমিশনারেটে ঢোকার আগে কুণাল বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে। তাই সব জানাতে এসেছি।” আর বেরিয়ে আসার পরে তাঁর বক্তব্য, “সুদীপ্ত সেনের অপকর্মের ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদের। তাঁকে বলেছিলাম, সংস্থা বন্ধ করার আগে কর্মীদের বেতন, পিএফ মিটিয়ে দিতে। চিঠিতে উনি আমার বিরুদ্ধে যা অভিযোগ করেছেন, তা পরিকল্পিত ও মিথ্যে।” কুণালের দাবি, সারদার বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা পার্ক স্ট্রিট থানায় যে অভিযোগ করেছেন, তা-ও ভিত্তিহীন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “যাঁরা আমাকে আক্রমণ করছেন, তাঁরা আসলে সুদীপ্ত সেনকেই আড়াল করতে চাইছেন।”
এ দিন কমিশনারেট থেকে বেরনোর মুখে কুণালের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় উত্তর ২৪ পরগনা যুব কংগ্রেস। কেউ কেউ গাড়ির বনেটে চাপড় মারেন। পুলিশের সঙ্গেও ধস্তাধস্তি হয় বিক্ষোভকারীদের। অবস্থা সামলাতে মিনিট দশেক লাগে। তার পরে বেরোতে পারেন কুণাল।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.