সারদায় বিতৃষ্ণা দেবযানীর, শুনে ধন্দ পুলিশে
দন্তকারীদের দেবযানী বলেছেন, ‘বিপদ বুঝে’ তিনি সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন। কী বিপদ, তা-ও বলেছেন। পুলিশের কাছে তাঁর বক্তব্য: ইদানীং নিশা-সহ একাধিক মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরে সুদীপ্তবাবু লাখ লাখ টাকা খোলামকুচির মতো ওড়াতে শুরু করেছিলেন। উপরন্তু সারদা গোষ্ঠীর সাম্প্রতিক বেহিসেবি লেনদেন ও টালমাটাল আর্থিক অবস্থা দেখে তাঁর মনে হয়েছিল, দুর্দিন ঘনিয়ে আসছে। জেরায় দেবযানীর দাবি: গোষ্ঠী-কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ সারিতে থাকার সুবাদে ওই সব অনিয়মে তাঁর নিজের নামও জড়িয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেছিলেন।
এবং এ কারণেই তিনি সারদা তথা সুদীপ্তের সংস্পর্শ থেকে সরে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন বলে তদন্তকারীদের জানান দেবযানী। পুলিশকে বলেন, সুসময়ে ‘সেন স্যার’ তাঁকে সারদা-র চল্লিশটি সংস্থার ডিরেক্টর পদে বহাল রেখেছিলেন। কিন্তু সম্পর্কে অবনতির জেরে ২০১২-র পরে দেড় বছরে ৩৫টি সংস্থা থেকে তাঁকে সরানো হয়। তাঁর কৌঁসুলি অনির্বাণ গুহঠাকুরতা ও অভিষেক মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, সারদার যে শুধু ৫ সংবাদমাধ্যম সংস্থার ডিরেক্টর পদে দেবযানীর নাম থেকে গিয়েছে, সেটা দায়ে পড়েই। কীসের দায়?
তদন্তকারীদের দেবযানী জানান, মিডিয়া সংস্থায় ডিরেক্টর থাকতে গেলে পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের থেকে অনুমোদন পেতে লাগে। দেবযানীর দাবি: সারদা গোষ্ঠীতে শুধু তাঁর নামে অনুমোদন ছিল। নতুন কারও নামে অনুমোদন পাওয়া কঠিন, সময়সাপেক্ষ বলেই তাঁকে মিডিয়া সংস্থার কর্তৃত্ব থেকে দ্রুত সরানো যায়নি। সারদার কোন কোন সংবাদমাধ্যম সংস্থায় তিনি যুক্ত ছিলেন?
পুলিশকে দেবযানী জানান, বেঙ্গল মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের তিনি ডিরেক্টর ছিলেন ২০১১-র ১৯ এপ্রিল থেকে। ব্রডকাস্ট ওয়ার্ল্ডওয়াইড প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টর হন ২০১১-র ১২ এপ্রিলে, দেশকাল পাবলিকেশন প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টর পদে অভিষেক ২০১১-র ২৫ নভেম্বরে। দেবকৃপা ব্যাপার প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টর হিসেবে দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের নাম উঠেছিল ২০১২-র ৯ জুলাই। সে বছরের ১১ জুলাই ভিবজিওর মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টর হন তিনি। দেবযানীর দাবি: তাঁকে সরিয়ে নিশাকে ওই পাঁচটি সংস্থার মাথায় বসানোর লক্ষ্যে সুদীপ্ত কাগজ জোগাড়ের চেষ্টা শুরুও করে দিয়েছিলেন। তবে ‘সেন সাহেবের’ সঙ্গে সম্পর্ক ‘তলানিতে’ ঠেকে যাওয়ার পরে তিনি নিজেও আর সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি। সেই মতো গত মাসে তিনি সারদার সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেন বলে দেবযানী জেরায় জানিয়েছেন।
কিন্তু সাম্রাজ্য পতনের আগে সেই সেন স্যার-ই তো তাঁকে ডাকলেন! কাছে-পিঠে নয়, সেই দিল্লিতে। তিনিও সাড়া দিলেন! তার পর তাঁর সঙ্গেই গেলেন কাশ্মীরে! এর ব্যাখ্যা কী?
গোয়েন্দাদের কাছে দেবযানীর ব্যাখ্যা: তিনি যে হেতু সংস্থার অনেক গূঢ় খবর, অনেক গোপন কাজকর্মের কথা জানেন, তা-ই সুদীপ্ত তাঁকে কলকাতায় রাখতে চাননি। রীতিমতো ছক কষে, গল্প সাজিয়ে তাঁকে ডেকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দেবযানী দাবি করেছেন। পুলিশ-কর্তারা অবশ্য তাঁর সব কথা এখনও বিশ্বাস করছেন না।
কেন? গোয়েন্দা-সূত্রের খবর: দেবযানী যে সময়ে ডিরেক্টর পদ থেকে তাঁর অপসারণের কথা বলছেন, জানা গিয়েছে, তখনও তিনি প্রায় সারাক্ষণ সুদীপ্তের সঙ্গেই থাকতেন। ফলে ‘সম্পর্কে চিড়’ তত্ত্বের ভিত্তি কতটা, তা তদন্তসাপেক্ষ। ঢাকুরিয়ার বেসরকারি ব্যাঙ্কেও দেবযানীর দু’টি অ্যাকাউন্টে বিস্তর টাকার হদিস মিলেছে।
দেবযানী-উবাচ যাচাই করতে সারদার আরও কয়েক জনের সঙ্গে গোয়েন্দারা তাই কথা বলতে চান।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.