বিভিন্ন অপরাধের জন্য নিজের গ্রাম থেকে তাকে আগেই তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এক বার জেলও খেটেছে। কয়েক দিন মাসির বাড়িতে গা ঢাকা দিয়ে থাকার পরে দিল্লির পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় আর এক অভিযুক্ত প্রদীপ কুমারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ভোরে বিহারের লক্ষ্মীসরাইয়ের বরাইয়া গ্রামে মাসির বাড়ি থেকে ধরা পড়ে ১৯ বছরের যুবক।
এডিজি (সদর) রবীন্দ্র কুমার আজ পটনায় বলেন, “দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযানে এসটিএফ এবং জেলা পুলিশ প্রদীপকে গ্রেফতার করেছে। দিল্লির যৌন নির্যাতনের ঘটনায় সে যুক্ত।” পুলিশের সামনে নাকি দোষ স্বীকার করে প্রদীপ বলেছে, “খুব বড় ভুল হয়ে গিয়েছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, প্রদীপ আদতে শেখপুরার আইয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার গ্রেফতার হওয়ার খবর শুনেই আইয়াপুর গ্রামের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা প্রদীপের ফাঁসির দাবি তোলেন। গ্রামবাসীদের দাবি, যার জন্য শেখপুরার মাথা হেঁট হয়েছে, যে একটি ছোট্ট শিশুর উপর এই ভাবে নির্যাতন চালাতে পারে, তার বেঁচে থাকার অধিকার নেই।
প্রদীপ কুমার |
গ্রামবাসীরাই পুলিশকে জানিয়েছেন, ছোট থেকেই বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল প্রদীপ। বাড়ি বাড়ি চুরি করে বেড়াত। বার বার ধরা পড়ার পরে তাকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তার দাদা-বৌদিও তার সঙ্গে সর্ম্পক রাখতেন না। গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পরে প্রদীপ একটি হোটেলে কাজ নিয়ে পটনায় চলে আসে। সেখানেও কোনও গণ্ডগোল পাকানোয় তাকে হোটেল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। চার বছর ধরে সে মা, দিদি এবং জামাইবাবুর সঙ্গে দিল্লিতে জামাইবাবুর বাড়িতে থাকত। রাজমিস্ত্রির কাজ করত সে।
দু’দিন আগে বিহারেরই মুজফ্ফপুর থেকে আর এক অভিযুক্ত মনোজকুমার শাহকে গ্রেফতার করা হয়। মনোজকে জেরা করে পুলিশ প্রদীপের নাম জানতে পারে। ঘটনার দিন দু’জনে মিলে শিশুটিকে লজেন্সের লোভ দেখিয়ে নিয়ে এসেছিল বলে মনোজ পুলিশকে জানিয়েছে। জেরায় প্রদীপের নাম সামনে আসায় দিল্লি পুলিশের ছ’জনের একটি দল শেখপুরা পৌঁছয়। সেখানে এসটিএফের সঙ্গে জেলা পুলিশের একটি দল যৌথ ভাবে তল্লাশিতে নামে। শেখপুরার বাড়িতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, গ্রামের লোক তাকে আগেই সেখান থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এর পর পুলিশ লক্ষ্মীসরাইয়ে প্রদীপের মাসির বাড়ির খোঁজ পায়। আজ ভোরে সেখানে পুলিশের দল পৌঁছয়। এই বাড়িতে তিন দিন ধরে প্রদীপ লুকিয়ে ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। প্রদীপ গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তার মাসির বাড়িতে তালা ঝুলছে। হামলার আশঙ্কায় সে বাড়ির লোকেরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন।
|