|
|
|
|
ধর্ষণের চেষ্টা অসমেও |
মায়ের সামনেই দুষ্কৃতীরা ছিনিয়ে নিল নাবালিকাকে |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
মায়ের হাত থেকে ন’বছরের মেয়েকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল দুই যুবক। এর পর তার উপরে নির্যাতন চালিয়ে কেটে দেওয়া হল গলা। অবশ্য সময় মতো হাসপাতালে ভর্তি করায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছে মেয়েটি। অসমের ‘গুড়িয়া’ নিজেই পুলিশের কাছে ঘটনার বিবরণ দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত দুই অপহরণকারী তার সঙ্গে ‘খারাপ কাজ’ করে উঠতে পারেনি। আর ওই দু’জনকে সে ভালই চিনে রেখেছে। ধরে আনলে সে তাদের ঠিক চিনতে পারবে।
দিল্লি, মধ্যপ্রদেশের পরে এ বার অসমের বরাক উপত্যকায় পাশবিক আক্রমণের সম্মুখীন এই গুড়িয়া। দিল্লির গুড়িয়া-কাণ্ড নিয়ে যখন গোটা দেশ উত্তাল, তখনই শিলচর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে, পেঁচাছেড়া এলাকা থেকে গত কাল দুই যুবক ন’বছরের মেয়েটিকে অপহরণ করে। ঘণ্টাখানেক পরে একটি চা বাগানে মেয়েটির সন্ধান পাওয়া যায়। পুলিশ মেয়েটিকে যখন উদ্ধার করে তখন তার পোশাক ছিন্নভিন্ন। গলায় ও শরীরে ছিল ধারাল অস্ত্রের আঘাত। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, মেয়েটিকে ধর্ষণ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা যায় তাকে ধর্ষণ করা হয়নি। পুলিশের সন্দেহ, ধর্ষণের চেষ্টা করলেও, শেষে দুই অপহরণকারী কোনও কারণে মেয়েটিকে জখম করে পালায়।
মেয়েটির বাড়ি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বদরপুর এলাকায়। গত সপ্তাহে মা ও ভাইয়ের সঙ্গে সে কাটিগড়ায় মামার বাড়ি বেড়াতে এসেছিল। গত কাল দুপুরে মা-মেয়ে পেঁচাছড়ার স্থানীয় বাজারে পঞ্জিকা কিনতে যায়। মায়ের বক্তব্য, বাড়ি ফেরার পথে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরেই, অটোয় সওয়ার দুই যুবক মেয়েটিকে হ্যাঁচকা টান মেরে অটোতে তুলে নিয়ে পালায়। ঘটনার আকস্মিকতায় অটোর নম্বরও মনে রাখতে পারেননি তিনি। ঘটনাটি কালাইন থানায় জানানো হয়। পুলিশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে মেয়েটির সন্ধান শুরু করে।
বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ খবর আসে, কালাইন চা বাগানের ঝোপে একটি মেয়ের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে, বাগানের জনহীন এলাকার নালার মধ্যে পড়ে মেয়েটি কাঁদছে। আপাতত শিলচর মেডিক্যাল কলেজে মেয়েটির চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা জানান, সে বিপদমুক্ত। মেয়েটির গলায় ছোট ছুরি ও শরীরে ব্লেডের আঘাত রয়েছে। পুলিশ সুপার দিগন্ত বরা বলেন, “প্রাথমিক ভাবে আমরা নিশ্চিত মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়নি। ডাক্তারি রিপোর্টেও বলা হয়েছে মেয়েটির যৌনাঙ্গে কোনও ক্ষত নেই। কারা, কেন এমন ভাবে অত্যাচার চালাল তা জানতে তদন্ত চলছে। এখনও পর্যম্ত ওই দুই যুবক ও অপহরণে ব্যবহৃত অটোটির বিষয়ে নিশ্চিত খবর মেলেনি।” তিনি আরও জানান, মেয়েটি নিজেই পুলিশের কাছে অপহরণকারীদের চেহারার বর্ণনা দিয়েছে। জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের সামনে আনলেই সে চিনতে পারবে।
তবে শুধু অসমেই নয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ আর যৌন নির্যাতনের ঘটনা কিন্তু ঘটেই চলেছে। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নাবালিকারাই এর শিকার। মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া হোক বা উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগর, কিংবা বারাণসী। একের পর এক নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে গত চব্বিশ ঘণ্টায়। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই নির্যাতিতা শিশুদের বয়স চার থেকে দশ বছরের মধ্যে। আবার জম্মু, জয়পুর আর নয়ডা থেকেও ধর্ষণের অভিযোগ এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই তিনটি ক্ষেত্রে ধর্ষিতারা প্রাপ্তবয়স্কা। এ দিকে, অবস্থা ভাল নয় মধ্যপ্রদেশের ঘনসৌরের সেই নাবালিকার। গত ১৭ এপ্রিল চকোলেটের লোভ দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছিল ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি। নাগপুরের হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, নাবালিকার মাথার আঘাত গুরুতর। তার মাথায় অক্সিজেন যাচ্ছে না। তাকে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রে রাখা হয়েছে। শিশুটির অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। |
|
|
|
|
|