রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় রাজ্যের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে পুরো পাঁচ বছর ভাল ভাবে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) চালানোর কথা ঘোষণা করেছেন জিটিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ তথা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। এ বার রাজ্যের তরফেও কিছুটা সুর নরম করে গুরুঙ্গদের আর্জি মেনে জিটিএ-র প্রধান সচিব পদের জন্য চার জনের নামের একটি তালিকা পাঠানো হল।
গুরুঙ্গ বলেন, “রাজ্য সরকারের পাঠানো তালিকা পেয়েছি। আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তালিকা থেকে কাউকে পছন্দ না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নতুন তালিকা পাঠাতে অনুরোধ করা হবে রাজ্য সরকারকে।”
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান সচিব পদে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় জানান, জিটিএ আইন অনুযায়ী, রাজ্য সরকার জিটিএ-র প্রধান সচিব পদে নিয়োগের জন্য প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারির পদমর্যাদার অফিসারের নাম জিটিএ-কে জানাবে। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার নাম ঠিক করেছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থ থাকায় সেই বিজ্ঞপ্তিতে সই হয়নি।” জিটিএ-র তরফে যিনি ওই মামলা করেছেন, সেই বিনয় তামাং জানান, এর পরে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে আগামী বুধবারের মধ্যে নামের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। বিনয়বাবু বলেন, “ঠিক হয়, নির্ধারিত সময়ে ওই তালিকা না পৌঁছলে জিটিএ-র তরফে হাইকোর্টের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে কারও নাম প্রধান সচিব হিসেবে বেছে নেওয়া হবে।”
ঘটনাচক্রে, এর কিছুক্ষণের মধ্যেই জিটিএ দফতরে চার জন অফিসারের নাম সংবলিত চিঠি পৌঁছে যায়। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আইনজীবী অয়নাভ রাহা বলেন, “বিনয় তামাঙের কাছে ওই নামের তালিকা জিটিএ দফতরে পৌঁছনোর খবর এসেছে।” জিটিএ সূত্রের খবর, তালিকায় নাম রয়েছে ভূমিসংস্কার দফতরের কমিশনার রামদাস মিনা, সংখ্যালঘু ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের সচিব শহিদুল ইসলাম, ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের সচিব কালীপদ দাস এবং উচ্চ শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত সচিব সুকুমার গনাইয়ের। জিটিএ যাঁর নাম বেছে প্রস্তাব পাঠাবে, তাঁকেই রাজ্য সরকার জিটিএ-র প্রধান সচিব হিসেবে নিয়োগপত্র দেবে। জিটিএ-র প্রধান সচিবের দায়িত্ব বর্তমানে সামলাচ্ছেন দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। তাঁর সঙ্গে নানা কারণে মোর্চার মতবিরোধ হয়। গত জানুয়ারির গোড়ায় সৌমিত্রবাবুকে সরিয়ে সেখানে প্রধান সচিব পদমর্যাদার কোনও আইএএস অফিসারকে বসানোর দাবি তোলে মোর্চা। কিন্তু রাজ্য গোড়ায় তাতে গুরুত্ব দেয়নি বলে মোর্চার অভিযোগ। তা নিয়ে নানা চাপান-উতোরের পরেও জিটিএ-র কাজকর্ম এখনও সৌমিত্র মোহনই দেখছেন।
এই অবস্থায় জিটিএ-চুক্তি ও আইন মেনে প্রধান সচিব পদে কাউকে বসানোর আগে অন্তত তিন জনের নামের তালিকা পাঠানোর দাবি তোলে মোর্চা। হাইকোর্টে মামলাও করা হয় জিটিএ-র তরফে।
|