নেতা-কর্মীদের উত্সাহ বাড়াতে দিনভর শিলিগুড়ির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়ালেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য, রাজ্যে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। কখনও দেখা গেল তিনি হাসপাতালে গিয়ে চিকিত্সাধীন দলীয় কর্মীকে সাহস দিলেন। কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল শিলিগুড়ি জেলে গিয়ে একটি মামলায় বন্দি দলীয় কর্মীর কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না সে খবর নিলেন।
৭ ঘণ্টা শহরের নানা এলাকায় ঘুরে গত ১০ এপ্রিলের ঘটনায় নানা মামলায় জড়িয়ে পড়া নেতা-কর্মীদের বারেবারেই উদ্দীপিত করার চেষ্টা করলেন। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নাগরিক কনভেনশনে রাজ্যের শাসক দলের কড়া সমালোচনা করে শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দিলেন তিনি। সর্বত্রই প্রায় একই সুরে সূর্যকান্ত বাবুকে বলতে শোনা গিয়েছে, “‘অমিত, সুদীপ্ত, সন্তোষের মত ছেলেদের লড়াই, এটাই আমাদের সংস্কৃতি।” এর পরেই তাঁর অভিযোগ, “রাজ্যের শাসক দলের সংস্কৃতি হল আমাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করা। রাজ্যের শাসকদল যা করছে, এবং বিরোধী আসনে থাকার সময়ও তাই-ই করেছে।” এর পরেই সূর্যকান্তবাবুর মন্তব্য, “জনতাই এ বার ঠিক করবেন, তারা ঠিক কোন ধরনের সংস্কৃতির সঙ্গে থাকতে চান।” |
এ দিন অন্যতম শীর্ষ নেতাকে নাগালে পেয়ে সিপিএম নেতা-কর্মীর অনেককেই উচ্ছ্বসিত হতে দেখা গেল। চিকিত্সাধীন সন্তোষ সাহানি, যাঁর পায়ে বেড়ি দেওয়া নিয়ে রাজ্য জুড়ে হইচই হয় তিনি সূর্যকান্তবাবুকে দেখে বলেন, “আপনাকে টিভিতে দেখেছি। আপনার কথা শুনেছি। আজ আপনাকে সামনে পেয়ে আমার স্বপ্নপূরণ হল। মনোবল আরও বেড়ে গেল।’
এ দিন সকালে দার্জিলিং মেলে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমেই তিনি সোজা চলে যান দলের জেলা কার্যালয়ে। সেখানে সামান্য সময় জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে দিনের কর্মসূচি ঠিক করেন। এর পর অশোক ভট্টাচার্য, জীবেশ সরকার, নুরুল ইসলাম, অনিল সাহা, দিলীপ সিংহ সহ অন্যান্য জেলা নেতাদের নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। প্রথমে দেখা করেন সেখানে ভর্তি থাকা সন্তোষ সাহানির সঙ্গে। তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেন, “সঙ্গে আছি। আরও লড়তে হবে।” এর পরে তিনি কথা বলেন মেডিক্যাল সুপার ও কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে।
সেখান থেকে যান শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ায় অমিতের বাড়ি। যখন সূর্যকান্তবাবু অমিতের বাড়িতে ঢুকলেন তখন অমিত পারলৌকিক কাজে ব্যস্ত। সূর্যবাবু সহ অমিতদের এক কামরার ঘরে তখন দলীয় কর্মীদের উপচে পড়া ভিড়। অমিতের কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে দেখে সূর্যবাবু নিজেই ডেকে নিলেন মামি জয়শ্রী রায়কে। অমিতের মায়ের মৃত্যুর সময় তিনিই ছিলেন তাঁর কাছে। তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার পরে অমিতকে কাছে ডেকে নিয়ে সূর্যকান্তবাবু বলেন, “তোমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খঁুজে পাচ্ছি না।” ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি শিলিগুড়ি সংশোধনাগারে বাবু লামার সঙ্গে দেখা করেন। এর পরেই তিনি চলে যান শালুগাড়ায় বাবু লামার বাড়িতে। |