উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের বিরুদ্ধে আন্দোলন করাকে কেন্দ্র করে বিরোধ তৈরি হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেসের অন্দরে। উন্নয়ন বরাদ্দে জলপাইগুড়ি জেলাকে বঞ্চনা করার অভিযোগ আগামী ৯ মে শিলিগুড়িতে দফতর ঘেরাও করে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে জলপাইগুড়ি লোকসভা যুব কংগ্রেস কমিটি। ১৬ এপ্রিল, মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা কংগ্রেস ও তাদের যৌথ কর্মসূচি বলে দাবি করে সংগঠনের নেতৃত্ব। শুক্রবার জেলা কংগ্রেসের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই ধরনের কোনও আন্দোলন কর্মসূচি তাঁদের নেই। শিলিগুড়ির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ‘অবরোধের’ মত কর্মসূচি নিলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে প্রদেশ নেতৃত্বের নির্দেশেই এই আন্দোলন থেকে বিরত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জেলা কংগ্রেস সূত্রে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার কংগ্রেসের যে কার্যালয় থেকে যুব কংগ্রেস কর্মসূচির ঘোষণা করেছিল, এদিন শুক্রবার শহরের থানা মোড়ের সেই রাজীব ভবনেই সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। মূলত ২৩ এপ্রিল প্রদেশ নেতৃত্বের নির্দেশে আইন অমান্য আন্দোলনের বিষয়ে ঘোষণার জন্য বৈঠক হলেও জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু বলেন, “সংবাদপত্রে দেখেছি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এই আন্দোলনে জেলা কংগ্রেসকে কিছু জানানো হয়নি। জেলা কংগ্রেসের কোনও সমর্থন নেই। প্রদেশ নেতৃত্বের সমর্থন নেই।” এ দিন মোহনবাবু জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে যুব কংগ্রেসের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার আগে জেলা নেতৃত্বকে জানাতে হবে।
যুব কংগ্রেসের লোকসভা সভাপতি চন্দন ঘোষকে পাশে বসিয়ে গত মঙ্গলবার জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সৈকত চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে আন্দোলনের কথা জানিয়েছিলেন। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখে এই কর্মসূচি গ্রহণের কারণেই ক্ষুদ্ধ জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁদের অনুমোদন না থাকার কথা জানিয়ে দিলেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। জেলা কংগ্রেসের অনুমোদন না থাকলেও যুব কংগ্রেস তাদের কর্মসূচিতে অনড় থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন যুব সভাপতি তথা জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সৈকতবাবু। তিনি বলেন, “যুব কংগ্রেসের গঠনতন্ত্রটা জানতে হবে। যুব কংগ্রেস থেকে জেলাভিত্তিক কোনও ইস্যুতে আন্দোলন করতে হলে জেলা সভাপতিকে জানানো জরুরি নয়।” সৈকতবাবুর কটাক্ষ করে বলেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে এ আন্দোলন জলপাইগুড়ি পুরসভার করার কথা ছিল। তাঁরা না করাতেই আমাদের এই আন্দোলন করতে হচ্ছে।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহনবাবু পুরসভার চেয়ারম্যান। এই দিন পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা টাউন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরেই পুরসভাকে বঞ্চনার প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সকলকেই নিজের এক্তিয়ারে থাকতে হয় এটা হয়ত অনেকে ভুলে গিয়েছেন।” আন্দোলন নিয়ে দলে দ্বন্দ্ব চললেও যুব কংগ্রেস সভাপতি চন্দন ঘোষ জানিয়েছেন, তাদের কর্মসূচি রদবদলের কোনও প্রশ্নই নেই। |