৮ মাসেই বদলি শিলিগুড়ির সিপি
সিপিএম-তৃণমূলের মিছিল ঘিরে ১০ এপ্রিল প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে কয়েক দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল শহর শিলিগুড়ি। সেই রাতেই শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমারের ক্ষমতা খর্ব করে কমিশনারেটের তদারকির দায়িত্ব উত্তরবঙ্গের আইজিকে দিয়েছিল রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। তার ৯ দিনের মাথায় আনন্দ কুমারকে ব্যারাকপুরের ডিআইজি (প্রশিক্ষণ) পদে বদলি করল রাজ্য। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন দুর্নীতি দমন শাখার ডিআইজি কে জয়রামন। যিনি দীর্ঘদিন শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে ছিলেন।

কে জয়রামন
যদিও রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের একটি সূত্রের দাবি, শিলিগুড়ির সিপি-র কাজকর্ম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা অভিযোগ ডিজি-র দফতরে পৌঁছেছে। দু’টি ক্ষেত্রে তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ১০ এপ্রিল মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’টি দলকে একই রাস্তায় মিছিল ও সভা করার অনুমতি দেওয়ার পরে শহর উত্তপ্ত হয়ে উঠলে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের শীর্ষ কর্তাদের একাংশকে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে হস্তক্ষেপ করতে হয়। সেই সময়ে কর্তব্যরত ্ফিসারদের মধে সমন্বয়ের অভাবও স্বরাষ্ট্র দফতরের নজরে আসে। সেই রাতেই রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তারা নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনার পরে সিপি-র কাজকর্ম তদারকি ও পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব দেন রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজিকে। দায়িত্ব গ্রহণের পরে সম্প্রতি আইজি সিপি-র অফিসে গিয়ে বৈঠকের সময়ে নানা কাজে গাফিলতিও দেখে বিরক্ত হন। পাশাপাশি, নতুন সিপি নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে যায়। স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানান, এক দিনের ঘটনার জের নয়, একাধিক কারণেই বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই ব্যাপারে বিদায়ী পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার অবশ্য বলেছেন, “কোনও অভিযোগের কথা আমার জানা নেই। এটুকু বলতে পারি, আমি বদলির নির্দেশ পেয়েছি। তা মেনে চলব।” আর শিলিগুড়ির হবু পুলিশ কমিশনার কে জয়রামন জানান, নির্দেশ মতো তিনি শীঘ্রই দায়িত্ব নেবেন। তিনি বলেন, “আমি শিলিগুড়ির বর্তমান সিপি-র সঙ্গে কথা বলেছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গিয়ে দায়িত্ব নেব।”
গত অগস্টের গোড়ায় শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট গঠিত হয়। প্রথম পুলিশ কমিশনারই আনন্দ কুমার। মাত্র সাড়ে ৮ মাসের মাথায় তাঁকে বদলি করে দেওয়া নিয়ে সব মহলেই নানা বিতর্ক দানা বাঁধছে। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, “পার্ক স্ট্রিট কাণ্ড, গার্ডেনরিচের ঘটনার পরে শিলিগুড়ির গণ্ডগোল, সব ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে আইপিএসদের উপরে শাস্তির খাঁড়া নামছে। আমি কোনও পুলিশ অফিসারের পক্ষে বা বিপক্ষে কিছু বলছি না। কিন্তু যে কোনও ঘটনায় পুলিশ অফিসারেরা বদলি হচ্ছেন বলেই নানা প্রশ্ন ওঠে।” এর পরেই সূর্যকান্তবাবুর মন্তব্য, “এ ধরনের ঘটনার পরে মন্ত্রীরাও যদি বদলি হতেন তা হলে খুব ভাল হতো।” প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এক ধাপ এগিয়ে অভিযোগ করেছেন, শিলিগুড়িতে সংঘর্ষের দিনে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে সিপিএম অফিস জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তাঁর কটাক্ষ, “পুলিশের একাংশ তাতে রাজি হননি বলেই হয়তো তাঁদের রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে।”
সিপিএম নেতাদের অভিযোগ পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “কোন অফিসারকে কখন, কেন, কোথায় বদলি করা হবে তা একেবারেই প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। পুলিশের ক্ষেত্রে তা স্বরাষ্ট্র দফতর করে থাকে। কিন্তু বিরোধী দল বলে সব কিছু নিয়েই রাজনীতি করতে হবে, এই প্রবণতা দুর্ভাগ্যজনক। আপাতত এর বেশি কিছু বলতে চাই না।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.