মন্ত্রীর নিশানায় বাম আমল
পূর্বসূরির বিরুদ্ধে তদন্ত রুখে দিলেন খোদ মন্ত্রী
কটি তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। এখন আবার অন্য এক অনিয়মের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী!
সবে ছ’মাস হল সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী হয়েছেন মন্টুরাম পাখিরা। দফতরে আগের মন্ত্রী শ্যামল মণ্ডলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ওঠায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সরিয়ে মন্টুবাবুকে মন্ত্রী করেন। নতুন মন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েই শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করে দু’মাসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে তাঁরই নির্দেশে তদন্ত শুরুর আগে তা স্থগিত করে দেওয়া হয়! এখন আবার বাম আমলের একটি প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ এনে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।
শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ ছিল? দফতর সূত্রের খবর, তিনি মন্ত্রী থাকাকালীন গত আর্থিক বছরে এক হাজার হেক্টর জমিতে বনসৃজন প্রকল্পে ম্যানগ্রোভ (গরান গাছ) লাগানোরে কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছিল। প্রকল্প রূপায়ণে রাজ্য সরকার ২ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছিল। কিন্তু ৩০ হেক্টর জমিতে বৃক্ষরোপণের কোনও কাজই হয়নি। সুন্দরবনের বিভিন্ন ব্লকে এ নিয়ে কম-বেশি অসন্তোষ ছিলই। কিন্তু গোসাবা সরাসরি অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ তোলে। এর পর চলতি বছরের গোড়ায় দফতরের নতুন মন্ত্রী হয়েই পূর্বসূরির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন মন্টুবাবু। কিন্তু তদন্ত শুরুর আগেই কেন তা স্থগিত করা হল? দফতর সূত্রের খবর, প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছিল সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদকে। পর্ষদের অন্যতম সদস্য এবং সুন্দরবন পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের অধিকর্তা অঞ্জন দাস বলেন, “আপাতত তদন্তের কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। কেন, তা আমি জানি না। এটুকু বলতে পারি, সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের নির্দেশ অনুযায়ীই তদন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।” পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও পাথরপ্রতিমার তৃণমূল বিধায়ক সমীর জানা বলেন, “আঞ্চলিক ভাবে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। গোসাবা ছাড়া অন্য কোথাও আপত্তিজনক কিছু নেই।” আর মন্ত্রী মন্টুবাবু সরাসরি প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁর সংক্ষিপ্ত জবাব, “কী ভাবে কী করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” প্রশাসনের একাংশের ধারণা, শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধে প্রথমে তদন্তের সিদ্ধান্ত হলেও পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে উপরমহলের নির্দেশেই তা স্থগিত রাখা হয়েছে।
প্রাক্তন মন্ত্রীর ব্যাপারে টুঁ শব্দ না করলেও পুকুর থেকে নোনা জল নিষ্কাশনের কাজে অনিয়মের একটি অভিযোগ নিয়ে এ বার সরব মন্টুবাবু। তাঁর বক্তব্য, ২০০৯-এ আয়লার পরে সুন্দরবনের বিভিন্ন পুকুর থেকে নোনা জল নিষ্কাশন প্রকল্প হাতে নিয়েছিল বাম সরকার। সেই কাজেই ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের কর্তারা। মন্ত্রীর অভিযোগ, আয়লার পরে সুন্দরবনের ৮০ হাজার ২১৪টি পুকুরকে নোনা জল নিষ্কাশন প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছিল। ওই প্রকল্পে ১০ কোটি ২৪ লক্ষ ৬২ হাজার ৯৩ টাকা খরচ দেখানো হয়। অথচ ওই কাজে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত, এমনকী জেলা প্রশাসনকেও এড়িয়ে ৪০টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দিয়ে কাজ করানো হয়েছিল। এই ‘অনিয়মের’ই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
তৃণমূলের মন্ত্রীর অভিযোগ এক কথায় উড়িয়ে দিয়েছেন বাম আমলে ওই সময়ে মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “জল নিষ্কাশনের কাজে কোনও অনিয়ম হয়নি। রাজ্যের অর্থ দফতরের অনুমোদন নিয়েই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে কাজ দেওয়া হয়েছে।প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় মানুষকে বাঁচাতে যে দ্রুততার সঙ্গে কাজ করা জরুরি, সেই ভাবেই কাজ হয়েছে। নথিপত্র সব দফতরে রয়েছে। ওরা তদন্ত করে দেখতেই পারে। কিন্তু কোনও অনিয়ম পাবে না।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.