পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের সঙ্গে মামলা চলছে নির্বাচন কমিশনের। পুরসভা নির্বাচন নিয়ে কিন্তু কমিশন গাঁধীগিরির পথে হাঁটতে চাইছে।
রাজ্যের ১৩টি পুরসভায় নির্বাচনের দিন ঠিক করার জন্য কমিশন ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারকে তিনটি চিঠি দিয়েছে। সরকারের তরফে তার জবাব আসেনি। কিন্তু সেই জট ছাড়াতে কমিশন এ বার আর আদালতে যাচ্ছে না। বরং নির্বাচনের নতুন তারিখের প্রস্তাব দিয়ে রাজ্যকে ফের চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। কমিশন যে নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন করাতেই আগ্রহী, সেটা বোঝাতেই এই চিঠি বলে কমিশন সূত্রে মন্তব্য করা হয়েছে।
কমিশন সূত্রের খবর, ১৩টি পুরসভার নির্বাচনের দিন ঠিক করার জন্য রাজ্য সরকারকে এর আগে তিনটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। কমিশন চেয়েছিল আগামী ৩০ জুন ওই পুরসভাগুলির নির্বাচন হোক। ওই সব পুরসভার অধিকাংশেরই মেয়াদ শেষ হচ্ছে জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। কমিশন চেয়েছিল তার আগেই নতুন বোর্ড তৈরি হয়ে যাক। কিন্তু ৩০ জুন নির্বাচন করাতে চেয়ে কমিশনের সচিব যে চিঠি দিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তার জবাব দেয়নি রাজ্য সরকার। তার ফলে ৩০ জুন আর ওই সব পুরসভার নির্বাচন করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কমিশন।
রাজ্য সরকার চিঠির জবাব দিল না কেন? রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমরা যথাসময়ে ১৩টি পুরসভার নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। তার পরেই কমিশনের চিঠির জবাব দেওয়া হবে।” পুর দফতরের কর্তাদের একাংশের ধারণা, পুরনির্বাচনেও কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইলে নতুন করে প্রশাসনিক-রাজনৈতিক সঙ্কট দেখা দিতে পারে। তাই সরকার আপাতত ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে। যদিও কমিশন পুরসভার ভোটের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইবে না বলেই ঠিক করেছে। কমিশনের এক কর্তার দাবি, “সরকারের আশঙ্কা অমূলক। ১৩টি পুরসভায় নির্বাচনের জন্য জেলার সশস্ত্র পুলিশই যথেষ্ট। পুরভোটেও কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হলে তা সরকারকে দেওয়া আগের চিঠিতেই জানিয়ে দেওয়া হত।”
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্য হওয়ায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছে। পুরসভা নির্বাচন যাতে ঠিক সময়ে হয়, তা নিয়েও আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার রাস্তা খোলা রয়েছে। কিন্তু তাঁরা সেই পথে যাচ্ছেন না বলে কমিশনের এক কর্তা শুক্রবার জানিয়েছেন। ওই কর্তাটি বলেন, “আমরা জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের কোনও একটা দিন ভোট করার পরামর্শ দেব। আমরা যে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই পুরভোট করাতে চাই এবং আমাদের যে সদিচ্ছা রয়েছে তারই প্রমাণ দেব।” হাইকোর্টে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে যে মামলা চলছে, প্রয়োজনে সেই মামলার শুনানিতেও প্রসঙ্গটি তোলা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে কমিশন।
|