এসএফআই নেতা সুদীপ্ত গুপ্তের স্মরণসভায় ভিড় উপচে পড়েছিল যেখানে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই নজরুল মঞ্চেই পাল্টা সভা করছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টি এম সি পি)! আজ, শুক্রবার ওই সভা থেকে দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের নিগ্রহের প্রতিবাদ জানাবে তৃণমূল। দিল্লির ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের যে মন্ত্রীরা ছিলেন, তাঁদের অনেককেই দেখা যেতে পারে এই সভায়।
তৃণমূল এই সভার সঙ্গে গোটা ছাত্র সংগঠনকে জড়াচ্ছে না। সভা আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ কলকাতা টিএমসিপি-কে। কারণ, এসএফআইকে ‘বাড়তি গুরুত্ব’ দিতে নারাজ তৃণমূল। তাই শুক্রবারের সভাকে এসএফআইয়ের ‘পাল্টা’ বলে মানতে নারাজ তারা। টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডার বক্তব্য, “এটা আমাদের সাংগঠনিক ও ঘোষিত কর্মসূচি।” সভাকে ‘পাল্টা’ না-বললেও সুদীপ্তর মৃত্যু নিয়ে বামেদের তোপ দেগে শঙ্কুদেব বলেন, “রাজ্যের বঞ্চনা নিয়ে কথা বলতে দিল্লিতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল, যে ভাবে অর্থমন্ত্রীর উপরে হামলা হয়েছিল, তার প্রতিবাদ করতেই সভার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
পথের রাজনীতি থেকে দূরে থাকছে না বামেরাও। আজ বিকেলেই ধর্মতলার লেনিন মূর্তি থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেওয়ার কথা বিমান বসু, মঞ্জুকুমার মজুমদার, ক্ষিতি গোস্বামী, হাফিজ আলম সৈরানির মতো শীর্ষ বাম নেতাদের। তার আগে বসবে রাজ্য বামফ্রন্টের বৈঠক। কলকাতা জেলা ফ্রন্টের তরফে দিলীপ সেন, রবীন দেবরা জানান, দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদের নামে কলকাতায় বামেদের ২৫টি কার্যালয় ভাঙা হয়েছে। এর প্রতিবাদে ২৩ তারিখ তাঁরা কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে যাবেন।
পাশাপাশি, বামফ্রন্টের ৮টি যুব সংগঠন ২৫ এপ্রিল ‘মহাকরণ চলো’র ডাক দিয়েছে। ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি আভাস রায়চৌধুরী এ দিন বলেন, “বেকারদের হাতে স্থায়ী কাজ দাও, শান্তির জন্য সন্ত্রাস থামাও এই দাবিতে ২৫ তারিখ ৮টি বামপন্থী যুব সংগঠন শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল ভাবে পথ হাঁটব। মিছিল শেষে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে দাবিপত্র দিতে চাই।” তবে ওই দিন আইন অমান্যের কোনও কর্মসূচি এখনও তাঁদের নেই বলে আভাসবাবু জানিয়েছেন। পুলিশের থেকে তাঁরা কলেজ স্কোয়ারে জমায়েতের অনুমতি পেয়েছেন। সেখান থেকে পুলিশের নির্দেশিত পথেই মিছিল নিয়ে যাওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, দীনেশ মজুমদার ভবনে এ দিন যুব সংগঠনগুলির বৈঠকে ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং সিপিআইয়ের যুবদের তরফে অনির্বাণ চৌধুরী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস সিংহেরা ডিওয়াইএফআইয়ের কাছে লিখিত ভাবে দাবি জানিয়েছেন, যুব স্তরেও একটি সমন্বয় কমিটি গড়া হোক। এই নিয়ে আলোচনা করে সহমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সিপিএমের যুব নেতৃত্ব শরিকদের আশ্বাস দিয়েছেন।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে এ দিনই প্রদেশ কংগ্রেস সদর দফতর থেকে গাঁধী মূর্তি পযর্ন্ত মিছিল করে যুব কংগ্রেস। |