পরিচালন সমিতির বৈঠককে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ও মারামারিতে বুধবার উত্তেজনা ছড়াল পটাশপুরের অমরপুর হীরালাল বিদ্যানিকেতনে। প্রসঙ্গত, প্রায় মাস দু’য়েক আগে সমিতির ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদে আট দিন স্কুলে তালা ঝুলিয়ে রেখেছিল এক গোষ্ঠী। প্রশাসন ও দলের উচ্চ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে অচলাবস্থা কাটে।
প্রশাসন ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিভাবক প্রতিনিধি হিসাবে সমিতির সম্পাদক হয়েছিলেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর জয়ন্ত জানা। কয়েক মাস আগে অভিভাবক সদস্য হিসাবে তাঁর মেয়াদ শেষ হয়। তা ছাড়া পদত্যাগ করেন দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর অভিভাবক সদস্য অশোক দাস। ওই দুই শূন্যপদ পূরণ নিয়ে মতান্তর হয় দুই গোষ্ঠীর। তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর পক্ষ নেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিমান পয়ড়্যা। এর জেরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। এ দিকে কয়েক মাস ধরে স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক পদে কেউ না থাকায় বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্কুলের উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজ। অচলাবস্থা চলছে মিড-ডে মিলেও। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে দু’পক্ষকেই দায়ী করে ক্ষোভ জানিয়েছেন অভিভাবকেরা।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিমান পয়ড়্যা বলেন, “বুধবার স্কুলে পরিচালন সমিতির বৈঠক চলাকালীন স্থানীয় কয়েক জন এসে বৈঠক বন্ধ করার চেষ্টা করেন। আমরা আপত্তি করলে সমিতির সভাপতি অরবিন্দ মণ্ডলকে মারধর করা হয়। বাধা দিতে গিয়ে আহত হন বৈঠকে উপস্থিত কয়েক জন। গণ্ডগোলের খবর পেয়ে অন্য এক পক্ষ এলে উভয়পক্ষের মারামারি হয়।” বিমানবাবু জানান, “সম্পাদক না থাকায় আর্থিক সমস্যায় ভুগছে স্কুল। দু’এক দিন পরেই হয়তো মিড-ডে মিল বন্ধ করে দিতে হবে।” বিক্ষোভকারী গোষ্ঠীর শঙ্করনাথ দাস, সমিতির সদস্য ধনঞ্জয় শীটদের অভিযোগ, “আমাদের না জানিয়ে সমিতির বৈঠক হচ্ছিল। খবর পেয়ে প্রতিবাদ করি। দাবি জানাই, সমিতির দু’জন সদস্যকে মনোনীত করতে হবে যাঁদের নাম দলের ব্লক কমিটি থেকে সুপারিশ করা হয়েছে।” অভিযোগ, ফোনে খবর পেয়ে দলীয় নেতা ধনঞ্জয় মণ্ডল, তাপস সাহুদের নেতৃত্বে জনা পঞ্চাশেক লোক লাঠি নিয়ে তাঁদের মারধর করে। শঙ্করনাথ দাসেদের তরফে থানায় অভিযোগ জানানো হয়। ধনঞ্জয় মণ্ডল বলেন, “ওই গোষ্ঠী এর আগে স্কুলে তালা দিয়েছিল। ব্যক্তিগত স্বার্থে স্কুলের ক্ষতি করছে তাঁরা। দলীয় নেতৃত্বের একাংশের মদতও আছে। আমরা মারধর করিনি।” |