|
|
|
|
বিডিওকে অভিযোগ |
চালকলে ধান বিক্রির পাঁচ মাস পরেও টাকা পেলেন না চাষিরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
সহায়ক মূল্যে ধান কেনার পরে চাষিদের টাকা না দেওয়ার অভিযোগ উঠল চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের নয়াবসত পঞ্চায়েতের মালিডাঙার এক চালকলের বিরুদ্ধে। চাষিরা কেউ ৩০ কুইন্টাল কেউ বা ৪০-৪৫ কুইন্টাল ধান বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু প্রায় পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও শতাধিক চাষি এখনও টাকা পাননি। আবার কোনও কোনও চাষিকে দেওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চেক বাউন্স করেছে বলেও অভিযোগ! কিছু দিন আগে আবার ওই চালকল বন্ধও হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার চাষিরা সমস্যার কথা লিখিত ভাবে বিডিও সুশোভন মণ্ডলকে জানান। তিনি বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। কিছু বাউন্স হওয়া চেকের ফটোকপিও পেয়েছি। দ্রুত ওই মিল-মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঠিক কত সংখ্যক চাষি টাকা পাননি, সেই তথ্য আমার কাছে নেই।”
চালকল মালিক সানোয়ার ত্রিব্রুয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মিলের ক্যাশিয়ার অচিন চক্রবর্তী ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জেলা খাদ্য পরিদর্শক পার্থপ্রতিম দাস বলেন, “এ বার আমাদের জেলায় ধান কিনে টাকা না দেওয়ার কোনও অভিযোগ আমি পাইনি। মালিডাঙার বিষয়টি জানি না। যদি সত্যি হয়, তা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বার আমনের ফলন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ভাল হয়েছিল। অভাবী বিক্রি রুখতে সরকার সহায়ক মূল্যে ধান কেনার ব্যবস্থা করেছিল। জেলায় মোট ৫৯টি সমবায় এবং সরাসরি ৬৩টি চালকল ধান কিনেছিল। খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলায় ধান কেনার দায়িত্ব পেয়েছিল কনফেড, বেনফেড, ইসিএসসি এবং এনসিসিএফ প্রভৃতি সংস্থা। স্থানীয় সূত্রে খবর, এ বার নয়াবসত পঞ্চায়েতের ভুলা সমবায় ধান কিনেছিল। কিন্তু ওই সমবায়টি একটু দূরে থাকায় অনেক চাষিই সেখানে যাননি। বরং একই মূল্যে বেশি পরিমাণে ধান কেনায় স্থানীয় মঙ্গলপাড়া, দরকলা, মালিডাঙা, নয়াবসত, আগরি, আগোয়া-সহ প্রায় দশ-বারটি গ্রামের শতাধিক চাষি ডিসেম্বর মাসের শুরুতে ওই মিলে ধান দিয়েছিলেন। প্রথম দিকে তাঁরা টাকাও পেয়েছিলেন। কিন্তু ঘটনার প্রায় পাঁচ মাস পরে এখনও অনেকে টাকা পাননি। এর জেরে অধিকাংশ চাষি এ বার ইচ্ছে থাকলেও আলু চাষও করতে পারেননি। সংসার চালাতেও সমস্যায় পড়েছেন একাধিক চাষি। নন্দন কোলে, চন্দন কোলেরা বলেন, “আমরা ৩০ কুইন্টাল ধান দিয়েছিলাম। এক টাকাও পায়নি। এখন সংসার চালানোই দায় হয়েছে।” সুজিত দে, হরসুন্দর মান্নারা বলেন, “টাকা না পাওয়ায় এ বার কোনও চাষই করতে পারিনি।” ধান দিয়ে টাকা পাননি শ্যামলকান্তি রায় ও স্বরূপ ঘোষেরা। তাঁরা কিছু দিন আগে একটি ব্যাঙ্কের চেক পেয়েছিলেন। কিন্তু ওই চেক বাউন্স হয়েছে। ধান কিনে চাষিদের টাকা না দেওয়ার ঘটনা সমর্থন করছেন না পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের জেলা সভাপতি তাপস রায় বলেন, “আমরা এটা সমর্থন করছি না। ঘটনা সত্য হলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক। আমরাও মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাতে চাষিরা টাকা পান তার উদ্যোগ নেব।” |
|
|
|
|
|