|
|
|
|
বাসন্তীর ভোগে দই-পান্তা-শাক |
সুব্রত গুহ • ভূপতিনগর |
পঞ্চাশ বছরে পড়ল ভূপতিনগর থানার ইক্ষুপত্রিকা গ্রামের সবর্জনীন বাসন্তী পুজো। চরিত্রে সর্বজনীন হলেও ঐতিহ্যবাহী এই পুজোয় পুরনো উপাচারগুলি পালন হয় নিষ্ঠা সহকারে।
পুজোর সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উপলক্ষে এ বছর সপ্তাহব্যাপী বসন্ত মেলার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান উৎসব কমিটির সম্পাদক সাধনকুমার মাইতি। তিনি জানান, বাসন্তী পুজোর চার দিন উৎসবে মাতোয়ারা হন গ্রামের সবর্স্তরের সব মানুষ। বহু দূর থেকেও অনেকে আসেন এই পুজো আর মেলা দেখতে। তিনি বলেন, “সেই আনন্দ বজায় রাখতেই এ বার মেলায় পুরুলিয়ার ছৌ-নাচ, তরজা, কবিগান, যাত্রাপালা, আতসবাজি প্রদর্শন-সহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।” |
আজ সপ্তমী... |
 |
 |
দুই মেদিনীপুরেই ঘটা করে হচ্ছে বাসন্তী পুজো। তমলুকের পোদ্দার পাড়া ও এগরা
শহরের একটি মণ্ডপে ছবি দু’টি তোলা হয়েছে বুধবার। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস ও কৌশিক মিশ্র। |
|
তখন ১৯৬৩ সাল। ভূপতিনগর থানার প্রত্যন্ত ইক্ষুপত্রিকা গ্রামে প্রথম সবর্জনীন বাসন্তী পুজোয় উদ্যোগী হয়েছিলেন গ্রামেরই কয়েকজন বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন শরৎচন্দ্র মণ্ডল, সুরেন্দ্রনাথ ভূঁইয়া, কুঞ্জবিহারী পড়িয়া, প্রবোধ মাইতি, অবনীনাথ নন্দ-সহ গ্রামের বর্ষীয়ান কয়েকজন। তাঁরাই মাতৃ আরাধনায় খড়ের চালা-সহ মাটির মন্দির গড়ে তুলেছিলেন। সেই মাটির মন্দিরের জায়গায় এখন পাকা দালানের মন্দির। পুজো কমিটির সভাপতি স্বপন কুমার মণ্ডল জানান, গ্রামের সবর্জনীন বা বারোয়াড়ি পুজো হলেও এই পুজোর বেশ কিছু চিরাচরিত ঐতিহ্য রয়েছে যা আজও নিষ্ঠা সহকারে মেনে চলা হয়। ষষ্ঠীর দিন বিল্ব অধিবাসের মাধ্যমে দেবীর বোধন শুরু হয়। |
 |
 |
ইক্ষুপত্রিকা গ্রামের বাসন্তী পুজো ও লালগড়ে বাসন্তী পুজো।—নিজস্ব চিত্র। |
|
সপ্তমীতে নব পত্রিকা স্নান করিয়ে স্থাপন করা হয় ঘট। পঞ্চাশ বছর আগে গ্রামের যে সমস্ত পরিবার পুজোর উপকরণ দিয়ে পুজো শুরু করছিলেন, আজও সেই সব পরিবারের সদস্যরাই বংশনুক্রমিক ভাবে পুজোর উপকরণ দেন। নবমীর দিন রয়েছে গ্রামবাসী-সহ প্রায় দশ হাজার মানুষকে পাত পেড়ে অন্নভোগ খাওয়ানোর আয়োজন। দশমীর দিন সকালে দই, পান্তাভাত এবং পাঁচ রকমের শাক দিয়ে দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। ভোগের রান্নায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় বট ও অশ্বত্থ গাছের কাঠ। এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী-পুজোর এই চারদিনই পাঁচশো হাঁড়ি করে ক্ষীরের ভোগ দেবীকে উৎসর্গ করা হয়। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত গ্রামে প্রত্যেকেই নিরামিষ খাবার খান। এমনকী মেলাতেও সব নিরামিষ খাবার। |
|
|
 |
|
|