গুজরাত দাঙ্গার নারোড়া পাটিয়া মামলায় নিম্ন আদালত মোদী সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী মায়া কোডনানি-সহ দশ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। উচ্চ আদালতে এদের সকলের প্রাণদণ্ড চেয়ে সওয়াল করতে চলেছে সেই মোদী সরকারই। বিজেপির ভিতরে ও বাইরে মোদী-বিরোধীরা একে নরেন্দ্র মোদীর তরফে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার চেষ্টা বলেই মনে করছেন।
গত বছর অগস্ট মাসে নারোড়া পাটিয়া মামলার রায় বেরিয়েছিল। প্রাক্তন মন্ত্রী মায়ার ২৮ বছর জেল, বজরঙ্গ দল নেতা বাবু বজরঙ্গির আমৃত্যু জেল এবং আরও আট জনের ৩১ বছরের সাজা ঘোষণা হয়েছিল।
এ ছাড়া আরও ২২ জনের ২৪ বছরের জেল হয়েছিল। ২৯ জন খালাস পেয়েছিলেন।
নিয়ম অনুযায়ী, নিম্ন আদালত রায় ঘোষণা করার তিন মাসের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করতে গিয়েছে। কিন্তু গুজরাত সরকার সাত মাস পরে নড়ে বসেছে। সহযোগী সরকারি কৌঁসুলি গৌরাঙ্গ ব্যাস সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, ‘‘তিন জন আইনজীবীর একটি প্যানেল তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের বলা হয়েছে, হাইকোর্টে মায়া কোডনানি-সহ ১০ জনের প্রাণদণ্ড চাইতে।”
সেই সঙ্গে ২৪ বছর সাজাপ্রাপ্তদের শাস্তির মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ বছর এবং মুক্তিপ্রাপ্ত ২৯ জনের বিরুদ্ধে ফের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আর্জি জানানো হবে। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও যাতে এই আপিল করা যায়, তার জন্য হাইকোর্টের কাছে বিশেষ অনুমতি চাওয়া হবে। স্বাভাবিক ভাবেই এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজে পাচ্ছেন মোদী-বিরোধীরা। গুজরাতে তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর মোদীর চোখ এখন দিল্লির মসনদে। গুজরাত দাঙ্গার কালি ধুয়ে ফেলতে মরিয়া তিনি। রাজনীতির কারবারিদের মতে, নারোড়া পাটিয়া মামলাকে ঢাল করে মোদী এখন নিজের কলঙ্কমোচনের কাজটাই এগিয়ে নিতে চাইছেন।
কী ভাবে? বিরোধীদের অভিযোগ, কঠোরতর শাস্তি চেয়ে মোদী দাঙ্গার সঙ্গে নিজের দূরত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে তিনি দেখিয়ে দিতে চাইছেন, দাঙ্গাকারীদের কোনও ভাবে রেয়াত করা হচ্ছে না। এর মধ্যে দিয়ে বিরোধীদের জবাব দেওয়া এবং সংখ্যালঘুদের মন জেতাই তাঁর প্রকৃত উদ্দেশ্য বলে অভিযোগ। মোদীর সেই উদ্দেশ্য সফল হবে কি না, সেটা হাইকোর্টই বলবে। |