মাওবাদী দমনে বৈঠকে তিন রাজ্যের পুলিশের
ঞ্চায়েত ভোটের আগে জঙ্গলমহলে সক্রিয় হচ্ছে মাওবাদীরা। পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডের সীমান্তবর্তী এলাকায় মাওবাদী স্কোয়াডের ‘নতুন মুখ’দের আনাগোনা শুরু হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের এই সতর্কবার্তাকে গুরুত্ব দিয়েই দেখছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। ওই গোয়েন্দা রিপোর্টের প্রেক্ষিতে বুধবার ঝাড়গ্রাম এসপি অফিসে তিন রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্তাদের নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হল। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হল, তিন রাজ্যের পুলিশ সমন্বয় রেখে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে জোরদার তল্লাশি-অভিযান চালাবে।
বৈঠকে ছিলেন এ রাজ্যের আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত, ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা, ঝাড়গ্রামের এসপি ভারতী ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি সুনীল চৌধুরী, পুরুলিয়ার এসপি সি সুধাকর, আইজি (বালেশ্বর) আর পি কোচি, এসপি (জামশেদপুর সিটি) এস কার্তিক, ডিআইজি (সিআরপিএফ) টি খুঁটিয়া, কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্সের স্পেশাল ডিআইজি অনিল কুমার প্রমুখ। এ দিনই সন্ধ্যায় বেলপাহাড়ির শাঁখাভাঙার জঙ্গল থেকে দু’টি ডিরেকশনাল মাইন, একটি দেশি পিস্তল, ১১ রাউন্ড কার্তুজ ও একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করেছে পুলিশ ও সিআরপি।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন বৈঠকে ঝাড়খণ্ডের এক পুলিশ কর্তা অভিযোগ করেন, এর আগে অনেক সময়ই বেলপাহাড়ি ও পুরুলিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে তল্লাশি চালানোর সময় পশ্চিমবঙ্গের সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বোঝাপড়ার অভাবে সমস্যায় পড়তে হয়েছে।
ঝাড়গ্রাম এসপি অফিসে বৈঠক। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
বৈঠকে ওড়িশার এক পুলিশ কর্তা বলেন, মাওবাদী স্কোয়াডে নিত্য নতুন সদস্য যোগ দিচ্ছেন। ফলে তিন রাজ্য পুলিশের মধ্যে নবাগত মাওবাদীদের চিহ্নিত করার জন্য ছবি জোগাড় করে তা আদানপ্রদানের ব্যবস্থা করা দরকার। কয়েক মাস আগে ওড়িশা সংলগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় মাওবাদীরা গোপনে সভা করে গিয়েছে বলে দাবি করেন ওড়িশার এক পুলিশ আধিকারিক।
বৈঠকে ঝাড়গ্রামের এসপি ভারতী ঘোষ গোয়েন্দা সূত্র উল্লেখ করে বলেন, গত কয়েক মাসে ঝাড়খণ্ড রাজ্য লাগোয়া বেলপাহাড়ি ও জামবনি থানার প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে মাওবাদীরা ছোট ছোট বৈঠক করেছে। মদন, শ্যামল, সাহেবরামের মতো শীর্ষ মাওবাদী নেতারা একাধিক ‘নতুন মুখ’দের নিয়ে বৈঠক করেছে। মিটিং সেরে মাওবাদীরা প্রতিবেশী রাজ্যে পালিয়ে যাচ্ছে। খবর পাওয়ার পর থেকেই ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ ওই সব এলাকায় জোরদার তল্লাশি-অভিযান চালাচ্ছে বলে বৈঠকে জানান ভারতীদেবী। বৈঠকে ঝাড়গ্রামের এসপি প্রস্তাব দেন, মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় পুলিশের সেবামূলক (কমিউনিটি পুলিশ) কাজের ক্ষেত্র আরও বাড়িয়ে আন্তঃরাজ্য অভিযান শুরু করতে হবে। বৈঠক শেষে আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তিন রাজ্যের পুলিশের মধ্যে বিশেষ সমন্বয় রেখে তল্লাশি-অভিযান চালানোর লক্ষ্যেই আলোচনা হয়েছে। উগ্রবাদীদের যাতায়াত পথে নজরদারির ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
আইজি (বালেশ্বর) আর পি কোচির বক্তব্য, “মাওবাদীরা এখন প্রতি মুহূর্তে দ্রুত এলাকা পরিবর্তন করছে। তাই তিন রাজ্যের পুলিশের মধ্যে সমন্বয় ও নেটওয়ার্ক থাকাটা জরুরি। না হলে ফলপ্রসূ দমন-অভিযান সম্ভব নয়।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.