|
|
|
|
শিন্দের সঙ্গে বৈঠক মমতার |
মাওবাদীদের দাবিয়ে রাখতে ভরসা তিন পড়শিই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মাওবাদী শীর্ষ নেতা কিষেণজির মৃত্যুর পরে জঙ্গলমহল এখন অনেকটাই শান্ত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও এর কৃতিত্ব দিয়েছে বর্তমান রাজ্য সরকারকে। তবু মাওবাদী সমস্যা যেন কোনও ভাবেই মাথাচাড়া দিতে না-পারে, সেই জন্য প্রতিবেশী তিন রাজ্যের সহযোগিতা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দের উপস্থিতিতে মমতা এই আর্জি জানান।
বৈঠকের শেষে শিন্দে বলেন, “পূর্বাঞ্চলের চারটি রাজ্যের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মমতার শরীর ভাল নয়। তা সত্ত্বেও তিনি এসেছেন। আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।” দিন সাতেক আগে দিল্লিতে এসএফআই-সমর্থকদের হাতে নিগৃহীত হওয়ার পরে মমতা এবং রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র দু’জনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অমিতবাবুকে দিল্লিতেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মমতাও কলকাতায় ফিরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অশক্ত শরীরে মমতা এ দিনের বৈঠকে হাজির থাকলেও অমিতবাবু ছিলেন না। ছিলেন রাজ্যের পরিকল্পনা উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রচপাল সিংহ।
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বিহার, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডও পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের সদস্য। বৈঠকে ওই সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের থাকার কথা ছিল। তবে ওড়িশা ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রীরা আসতে পারবেন না বলে আগেই জানিয়ে ছিলেন। |
|
টাউন হলে বৈঠকের পরে। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র |
ঝাড়খণ্ডে রাষ্ট্রপতি-শাসন চলায় সেখানকার রাজ্যপাল সৈয়দ আহমেদ তাঁর দুই পরামর্শদাতা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব মধুকর গুপ্ত এবং সিআরপি-র প্রাক্তন ডিজি বিজয় কুমারকে নিয়ে বৈঠকে যোগ দেন। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের তরফে ছিলেন জলসম্পদ মন্ত্রী বিজয় চৌধুরী। আর ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী প্রসন্ন আচার্য ও রাজস্বমন্ত্রী সূর্যনারায়ণ পাত্রকে।
রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “পরিষদের চার সদস্য-রাজ্যেই মাওবাদী সমস্যা আছে। মাওবাদী মোকাবিলায় সিআরপি-ও আছে চার রাজ্যে। তাদের জন্য স্থায়ী শিবির করতে জমি যাতে বাধা হয়ে না-দাঁড়ায়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে সেই আর্জি জানানো হয়েছে এ দিনের বৈঠকে।” মাওবাদী হামলা রুখতে চার রাজ্যের প্রতিনিধিরা নিজেদের মধ্যে দ্রুত তথ্য বিনিময়ে জোর দিয়েছেন বলেও জানান ওই প্রশাসনিক কর্তা।
মাসখানেক আগেই ঝাড়খণ্ডের লাতেহার ও গুঝান্ডি স্টেশনের কাছে রেললাইনে নাশকতার ঘটনা ঘটে। সেই নাশকতায় আঙুল উঠেছে মাওবাদীদের দিকেই। এই নিয়ে আতঙ্ক এড়াতে যাতে আরও বেশি করে পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা যায়, সংশ্লিষ্ট চার রাজ্য সেই ব্যাপারে পরস্পরের সাহায্য চেয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। জাতীয় সড়কের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক প্রতিটি রাজ্যের সীমানা লাগোয়া এলাকায় ‘চেক পোস্ট’ তৈরির যে-প্রস্তাব দিয়েছে, তা নিয়েও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা করেন চার রাজ্যের প্রতিনিধিরা।
পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের শেষ বৈঠক হয়েছিল ২০০৫ সালে, রাঁচিতে। অর্থাৎ আট বছর পরে ফের বৈঠক হল। এই দীর্ঘ বিলম্বের যাতে পুনরাবৃত্তি না-ঘটে, প্রতি বছরে যাতে অন্তত এক বার এই বৈঠক হয়, সেই ব্যাপারে কেন্দ্রকে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করেছেন চার রাজ্যের প্রতিনিধিরা। আগামী বছর পরের বৈঠক হওয়ার কথা ওড়িশায়। সেই বৈঠকের আলোচ্যসূচি তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রকে। |
পুরনো খবর: ‘হেডমাস্টারের’ ঐতিহ্য কি বজায় রাখবেন শিন্দে |
|
|
|
|
|