উদ্বিগ্ন পরিবেশকর্মীরা
এ বার মাছ মরল বনবিতানেও
টানিক্যালের পরে বনবিতান।
সল্টলেকের এই উদ্যানে জলাশয়ে মাছ ভেসে উঠেছে, রবিবার সকালে এই খবরে পাঁচিল টপকে হাজির অসংখ্য মানুষ। হাজির প্রাতর্ভ্রমণকারীরাও। যে যে ভাবে পারছেন, মাছ তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে হুলস্থূল কাণ্ড। খবর পেয়ে বন দফতরের আধিকারিক-কর্মীদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। বন দফতর জানিয়েছে, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে মরা মাছ অনেকে নিয়ে যাওয়ায় বিপদের আশঙ্কা করছে প্রশাসনিক মহল।
এ দিনের ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যের অন্য জলাশয়ের প্রাণীদের সুরক্ষা নিয়ে। সম্প্রতি বটানিক্যাল গার্ডেনের ঝিলেও একই ঘটনা ঘটে। পরিবেশকর্মীদের দাবি, অবিলম্বে পদক্ষেপ করুক প্রশাসন। এ দিন বনবিতানে গিয়ে দেখা যায়, কালবোস, রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প-সহ বিভিন্ন ছোট-বড় মাছ ভেসে উঠেছে। বন দফতরের অবশ্য দাবি, ভেসে ওঠা মাছের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে অল্প সংখ্যকেরই।
কেন মারা গেল মাছ? সল্টলেকের রেঞ্জ অফিসার তপন দাশগুপ্ত জানান, গরমে জলাশয়ে জল কমে যাওয়ায় অক্সিজেনের অভাবে কিছু মাছ মারা গিয়েছে। অন্য দিকে, একটি ড্রেনেজ পাইপলাইনে ছিদ্র থেকে নোংরা জল জলাশয়ে মিশতে দেখা গিয়েছে। যদিও বন দফতরের এক কর্মীর কথায়, “নোংরা জলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়, বরং তা মাছেদের কাজেই লাগে। জলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে এই বিপত্তি।” পরে বন দফতরের কর্মীরা দু’টি নৌকায় করে ক্ষতিগ্রস্ত মাছগুলিকে নিয়ে যান।
তবে মানুষ যে ভাবে মরা মাছ নিয়ে গিয়েছেন, তাতে বিপদের আশঙ্কাই বড় হয়ে উঠেছে। কারণ, এই মরা মাছ খেলে অসুস্থতার আশঙ্কা আছে বলে পরিবেশবিদদের ধারণা। এই ঘটনায় তাঁরা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবকেই দায়ী করেছেন। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, “ওই জলাশয়ে কৃত্রিম জলের জোগান বা জল পরিষ্কারের ব্যবস্থা ছিল না। বছর পঞ্চাশ আগে ওই জলাশয় কৃত্রিম ভাবে তৈরি। পরিকল্পনার সময়ে ভূগর্ভস্থ জলস্তর নিয়েও ভাবা প্রয়োজন ছিল।”
কিন্তু এত মাছের মৃত্যুর অন্যতম কারণ যদি হয় গরমে জল কমে যাওয়া, তবে রাজ্যের অন্যান্য জলাশয়ে কী হবে? সুভাষবাবু বলেন, “প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করলে সমস্যা হয় না। এ ক্ষেত্রে যেমন প্রশাসনের দুর্বলতা রয়েছে, তেমনই সচেতনতার প্রসারে পরিবেশবিদ হিসেবে আমাদেরও ব্যর্থতা রয়েছে।”
তবে পরিবেশকর্মীদের একাংশের মতে, আবাসিক এলাকার একটি ড্রেনেজ পাইপলাইন থেকে ময়লা জল জলাশয়ে মেশাতেই এই ঘটনা। পরিবেশকর্মী বনানী কক্কর বলেন, ‘‘সরেজমিনে না দেখলে বলা মুশকিল। তবে ওই জলে ফলিডল জাতীয় কিছু মিশেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। গরমে জলের জোগানের দিকটিও মাথায় রাখা দরকার।”
ঘটনাস্থলে এক মৎস্য বিশেষজ্ঞ জানান, জলাশয়ে জল কমার পাশাপাশি বেশি পরিমাণে ময়লা জল মিশেছে। এর জেরে দ্রবীভূত অক্সিজেন কমে প্রথমে ছোট মাছ মারা যায়। এর প্রভাব পড়ে বড় মাছের উপরে। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, আগেও একটি-দু’টি করে মরা মাছ ভেসে উঠতে দেখে বন দফতরকে জানানো হয়। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মৎস্য দফতর ওই জলাশয়ের জলের নমুনা পরীক্ষার জন্য নিয়ে গিয়েছে। পুরো ঘটনা নিয়ে বন দফতরের রিপোর্ট চেয়েছেন মন্ত্রী হিতেন বর্মণ।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.