বাংলা নববর্ষে কোচবিহার রাজার কুলদেবতা মদনমোহন-সহ নানা দেব দেবীর রুপোর স্মারক তৈরি করে তা বিক্রির পরিকল্পনা নিয়েছে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। ভক্তদের দান করা রুপোর সামগ্রী গলিয়ে মুদ্রার আকারে ওই স্মারক তৈরি হবে। ওই বিষয়ে আগ্রহী একটি অলঙ্কার প্রস্তুতকারী সংস্থাকে মডেল স্মারক তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই মাসেই সংস্থাটি তার নমুনা দেবোত্তর কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেবে। এরপরে স্মারকের চূড়ান্ত বরাত দেওয়া হবে।
কোচবিহারের জেলাশাসক তথা দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সভাপতি মোহন গাঁধী বলেন, “ভক্তদের দান করা রুপোর সামগ্রী গলিয়ে মুদ্রার আকারে স্মারক তৈরির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। মে মাস থেকে আগ্রহীরা ওই স্মারক কেনার সুযোগ পাবেন।” ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, রাসমেলা ছাড়া নানা তিথিতে ফি বছর কুলদেবতা মদনমোহন মন্দিরে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। প্রণামী হিসাবে নগদ টাকা ছাড়াও অনেকে সোনা ও রুপোর গয়না দেন। প্রাথমিক ভাবে প্রায় ৩ কেজি রূপো গলিয়ে স্মারক তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুদ্রা আকারে স্মারকের পিঠে মদনমোহন দেবের ছবির ছাপ থাকবে। তৈরি করা হবে মা কালী এবং মা ভবানী দেবীর ছবি সংবলিত স্মারক। পাঁচ গ্রাম, দশ গ্রাম ও কুড়ি গ্রামের স্মারক প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে দিয়ে তৈরি করা হবে।
দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি তথা জেলাশাসক জানান, লাভ না দেখে সামান্য মূল্যে স্মারকগুলি বিক্রি করা হবে। তাই ভক্তদের সেগুলি সংগ্রহ করতে অসুবিধা হবে না। সেই সঙ্গে ট্রাস্টের আয়ও হবে। প্রাথমিক ভাবে পরিকল্পনা সফল হলে পরে আরও স্মারক তৈরি করা হবে। জানা গিয়েছে যে, স্মারকের নমুনা তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত অলঙ্কার তৈরির সংস্থার হিসেবে ১০ গ্রাম ওজনের স্মারকের দাম ৫৫০-৬০০ টাকা হতে পারে। রাজ পরিবারের দুয়ারবক্সি অমিয় বক্সি বলেন, “ভাল উদ্যোগ। এটা হলে পড়ে থাকা রুপোর সামগ্রীর সদ্ব্যবহার হবে।” ট্রাস্টের এই উদ্যোগে খুশি কোচবিহারের হেরিটেজ সোসাইটি। সোসাইটি সম্পাদক অরূপজ্যোতি দত্ত বলেন, “রাজ আমলের স্মৃতি সংবলিত স্মারক তৈরির ভাবনা অভিনব। দেশি বিদেশি পর্যটকরা কোচবিহারে এসে ওই স্মারক সংগ্রহের সুযোগ পাবেন। এক পিঠে রাজপরিবারের প্রতীক রাখা হলে আরও আকর্ষণীয় হবে।” |