কুকুরের কামড়ে আক্রান্তকে কে প্রতিষেধক (‘অ্যান্টি র্যাবিস সিরাম’) দেবেন, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে রামপুরহাট হাসপাতালে। যার ফল ভোগ করছেন আক্রান্তেরা। এক দিকে ওই প্রতিষেধক প্রয়োগ করার জন্য ১ এপ্রিল ফার্মাসিস্টদের লিখিত নির্দেশ দিয়েছেন হাসপাতাল সুপার। অন্য দিকে ফার্মাসিস্টদের দাবি, তাঁরা আক্রান্তদের ওই প্রতিষেধক প্রয়োগ করতে পারেন না, তা সরকারি নিয়মবিরুদ্ধ। দু’পক্ষের এই চাপানউতোরের জেরে নাজেহাল হচ্ছেন রোগীরা।
সুপারের নির্দেশকে ‘অবৈধ’ বলে দাবি করছেন হাসপাতালের তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারি সংগঠনের সভাপতি দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, “হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দু’জন চিকিৎসক থাকা দরকার। সেখানে মাত্র একজন থাকেন। ওই চিকিৎসক যখন ডাক পেয়ে অন্য বিভাগে ডিউটিতে চলে যান, তখন কম্পিউটার রুমে ফার্মাসিস্ট ও ডাটা অপারেটরদের রোগীর চাপ নিতে হয়।” হাসপাতালে বর্তমানে ছয় জন ফার্মাসিস্ট আছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন জরুরি বিভাগে ও দু’জন বহির্বিভাগের দায়িত্বে থাকেন। “একেই নির্ধারিত কাজের চাপ আছে, তার উপর সুপার এখন প্রতিষেধক প্রয়োগের কাজও আমাদের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছেন। আমরা সুপারকে জানিয়ে দিয়েছি, এ রকম অবৈধ কাজ করতে পারব না।” বলছেন হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট মহম্মদ সালাউদ্দিন।
এ দিকে, ফার্মাসিস্টেরা রাজি না হওয়ায় সুপারের নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে না। ফলে হাসপাতালে প্রায় দিনই কুকুরের কামড়ে আক্রান্তদের হয়রানির দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। সাত দিন আগে বাসবকুমার পাল নামে এক প্রৌঢ়কে কুকুর কামড়েছিল। মঙ্গলবার তিনি হাসপাতালে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, তাঁকে ফার্মাসিস্ট প্রতিষেধক দেবেন। ফার্মাসিস্টের কাছে গেলে তাঁরাও ঘুরিয়ে দেন। ঘণ্টা তিনেক পরে সুপার নিজে প্রতিষেধক দেওয়ার পরে আক্রান্তরা বাড়ি যান। প্রতিষেধক দেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের অনীহা কোথায়? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, “রোগীদের ভর্তির চাপ আছে। তার উপরে এক দিনে দশ জন করে প্রতিষেধক দিতে হয়। রোগী ভর্তি করব না প্রতিষেধক দেব?” হাসপাতাল সুপার হিমাদ্রি হালদার বলেন, “ফার্মাসিস্টরা রাজি না হওয়ায় ব্লাড ব্যাঙ্কের এক নার্স প্রতিষেধক দেবেন বলে ঠিক করা হয়েছে।” |