মমতার নির্দেশে বৈঠক আজ
লো-ভোল্টেজে বিপন্ন বোরো, বিপাকে রাজ্যও
রম পড়লেও শহরে লোডশেডিং প্রায় নেই। কিন্তু লো-ভোল্টেজের জন্য বেশ কিছু জেলায় শ্যালো পাম্প বা অগভীর নলকূপ চালানো যাচ্ছে না। ফলে বোরো চাষের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে মহাকরণে অভিযোগ এসেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই সমস্যায় অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন তৃণমূলের জেলা স্তরের নেতারা। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আজ, বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত।
মহাকরণ সূত্রের খবর, প্রথম ধাপে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক বা অতিরিক্ত জেলাশাসকদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে। থাকবেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পদস্থ কর্তারাও। বিদ্যুৎ পরিষেবার ক্ষেত্রে ওই সব জেলায় ঠিক কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে, বৈঠকে তা শোনার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হবে।
লো-ভোল্টেজের সমস্যা কেন?
বিদ্যুৎ-বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিকাঠামোয় খামতি থাকলেই লো-ভোল্টেজের সমস্যা দেখা দেয়। বিদ্যুৎ পাঠানোর জন্য রাজ্যের অনেক জেলারই প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও যথাযথ পরিকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। দেখা যাচ্ছে, একটি সাবস্টেশন থেকে যে-ক’টি গ্রামে বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা, তার থেকে অনেক বেশি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। কখনও বা স্বাভাবিক পাল্লার বাইরে গিয়ে একটি সাবস্টেশন থেকে অনেক দূর পর্যন্ত তার টেনে নিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা চলছে। এ-সবই লো-ভোল্টেজের কারণ।
এর সঙ্গে বিদ্যুৎ চুরির সমস্যা তো আছেই। এই সব কারণে এক জায়গা থেকে বিদ্যুৎ যখন অন্যত্র পৌঁছচ্ছে, ধাপে ধাপে তার শক্তি যাচ্ছে কমে। কমছে ভোল্টেজও।
সমস্যা মেটাতে মহাকরণে বৈঠক হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, রাতারাতি কি কোনও জেলায় লো-ভোল্টেজের সমস্যা মিটিয়ে ফেলা সম্ভব? নাকি সমাধান করতে করতে বোরো ধানের শুকিয়ে যাওয়াটাই ভবিতব্য?
বিদ্যুৎকর্তারা জানাচ্ছেন, কোনও ভাবেই অল্প সময়ের মধ্যে ওই সব জেলায় লো-ভোল্টেজের সমস্যা মেটানো সম্ভব নয়। নতুন সাবস্টেশন তৈরি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুতের লাইন না-টানা পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান হবে না। সেই সঙ্গে বন্ধ করতে হবে বিদ্যুৎ চুরি।
সাবস্টেশন তৈরি এবং বিদ্যুতের লাইন টানা হচ্ছে না কেন?
ওই সব কাজের পরিকল্পনা থাকলেও অনেক জায়গাতেই জমির সমস্যার কারণে তা করা যাচ্ছে না বলে বিদ্যুৎকর্তাদের অভিযোগ। তবে তাঁরা এ কথাও বলছেন যে, বেশ কিছু অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি আছে। সেই জন্যও লো-ভোল্টেজের সমস্যা হচ্ছে কোথাও কোথাও। কিন্তু রাতারাতি পরিষেবার সমস্যা মিটিয়ে পরিস্থিতি বদলে ফেলা কোনও মতেই সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন তাঁরা।
জট কত ঘোরালো, তার দৃষ্টান্ত দিয়ে এক বিদ্যুৎকর্তা বলেন, “খড়গপুরে একটি ৪০০ কেভির সাবস্টেশন তৈরি করছে রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থা। কিন্তু ওই সাবস্টেশনের সঙ্গে হাইটেনশন লাইন টানার তিনটি স্তম্ভ এখনও পর্যন্ত পোঁতা যায়নি। কারণ বাসিন্দারা জমি দিচ্ছেন না। ফলে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল লো-ভোল্টেজের সমস্যায় ভুগছে। এবং চটজলদি সেই রোগ সারানো কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।”
মহাকরণ সূত্রের খবর, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে বণ্টন সংস্থার বর্ধমানের এক চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে জোনাল ম্যানেজারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন? তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বর্ধমানের বিশেষ একটি অঞ্চলে লো-ভোল্টেজের সমস্যা থাকলেও এখনই সেই সমস্যার কোনও সমাধান করা যাবে না বলে তিনি সরকারকে রিপোর্ট দিয়েছিলেন। তাতে বেজায় চটে যান মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সেই ব্যক্তি এবং মুখ্যমন্ত্রী নিজেও। ফলে রাতারাতি তাঁর বদলির ফরমান জারি করা হয়। কিন্তু যত তাড়াতাড়ি তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল, তত দ্রুত লো-ভোল্টেজের সমস্যা মেটানো যাবে কি না, তার উত্তর বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা কিংবা সংবহন সংস্থার কর্তাদের কাছে নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.