পরীক্ষা হয়েছে দু’বছর আগে। কাকে কোন মাদ্রাসায় নিয়োগ করা হবে ‘কাউন্সেলিং’ করে সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে ১১ মাস আগে। রাজ্য জুড়ে মাদ্রাসার করণিক ও গ্রন্থগারিক পদের চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ২৮২ জনকে সে কথা জনিয়েও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজও তাঁদের চাকরিতে নিয়োগ করা হয়নি। দেওয়া হয়নি নিয়োগপত্রও। ফলে চাকরিতে নিয়োগ করার দাবি জানিয়ে গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করছেন করণিক পদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৯৩ জনের মধ্যে ১১৫ জন। অন্য দিকে গ্রন্থগারিক পদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাও আজ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করতে চলেছেন।
সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরটি রয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। ওই দফতরের প্রতিমন্ত্রী গিয়াসুদ্দিন মোল্লা বলেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছিল। তার মধ্যে যদি কেউ মামলা করেন, তবে তো আর কারও করার কিছু নেই। ফলে এরপর আদালতের নির্দেশ মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” করণিক পদে চাকরি প্রার্থীদের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের বিভিন্ন মাদ্রাসার শূন্যপদে করণিক ও গ্রন্থগারিক নিয়োগের আবেদনপত্র চেয়ে ২০১০ সালের এপ্রিলে সরকারি বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। তারপর ২০১১ সালের ২৯ মে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে পরীক্ষা নেওয়া হয়।” সুব্রতবাবু বলেন, “তার পর ১১ মাস কেটে গিয়েছে। তবুও কোন কারণে গ্রন্থগারিক ও করণিক পদে নিয়োগ করা হচ্ছে না তা কেউ জানে না। এ কারণে করণিক পদে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাশিস কর গুপ্তের এজালাসে রিজওয়ান ফিরদৌস-সহ ১১৫ জনের হয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে মামলার শুনানি রয়েছে।”
গ্রন্থগারিক পদে যোগ্যতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৮৯ জনের মধ্যে রয়েছেন হুগলির সুতপা রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, “কাকে কোন মাদ্রাসায় নিয়োগ করা হবে, সে সব বিষয় ১১ মাস আগে কাউন্সেলিং করে আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সরকারি দফতরে অনেক আবেদন নিবেদন করেও সুরাহা হয়নি। ফলে হাইকোর্টে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” করণিক পদের প্রার্থী বহরমপুরের বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘‘১০-১২ দিনের মধ্যে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে বলে ১১ মাস আগে কাউন্সেলিং-এর সময় আমাদের বলা। কিন্তু কোথায়? নিয়োগপত্রের জন্য দু’বছর ধরে চাতক পাখির মতো চেয়ে আছি। তাই মামলা লড়তে হল।”
মাদ্রাসা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির রাজ্য কমিটির নিবার্হী সভাপতি নুরে খোদা বলেন, “চাকরিতে নিয়োগ না করায় ২৮২ জন বেকারের ভোগান্তির সঙ্গেই ভুগছে মাদ্রাসার লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীও। দ্রুত সমস্যার সমাধান চেয়ে আবেদন করেছি।” |