এবড়োখেবড়ো রাস্তা উজিয়ে স্কুলে, স্কুলছুট বাড়ছে চাপড়ায়
তিন গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশায় সমস্যায় পড়েছেন চাপড়ার পীতাম্বরপুর, চারাতলা ও বৃত্তিহুদা গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। ওই তিন গ্রামেরই পড়ুয়ারা পড়শি গ্রাম বেলতলা জুনিয়র ও হাই মাদ্রাসায় পড়তে আসে। গ্রামগুলি থেকে পৃথক পৃথক বেলতলাগামী মেঠো রাস্তার সংস্কার কোন সূদুর অতীতে হয়েছিল তা স্মৃতি হাতড়েও মনে করতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। এবড়ো-খেবড়ো খানাখন্দে ভরপুর রাস্তা উজিয়ে পড়ুয়াদের স্কুলে আসতে রীতিমতো কালঘাম ছুটে যায়।
পার্শ্ববর্তী গ্রামের পড়ুয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে ভর্তি হয় বেলতলা হাই মাদ্রাসায়। জুনিয়র হাই মাদ্রাসা ও হাই মাদ্রাসা মিলিয়ে প্রায় হাজার দু’য়েক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। ইদানীং আশপাশ গ্রামের অনেক পড়ুয়াই রাস্তার ঝক্কি এড়াতে পাঁচ কিলোমিটার দূরের চাপড়ার বিভিন্ন স্কুলে ভর্তি হচ্ছে। জুনিয়র হাই মাদ্রাসার ইতিহাসের সহ শিক্ষক মফিজুল মল্লিকের আপেক্ষ, “রাস্তা খারাপ। তাই ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।”
বেহাল সড়ক। —নিজস্ব চিত্র
পীতাম্বরপুর থেকে বেলতলায় আসার জন্য প্রায় দুই কিলোমিটার মাটির রাস্তার দশা বেহাল। রাস্তার মাঝে বড় গর্ত। সংকীর্ণ ওই রাস্তায় ভ্যান-রিকশার গেলে পাশে সাইকেল নিয়ে যাওয়ার রাস্তাটুকুও থাকে না। বর্ষাকালে একটু জল জমলে রাস্তার কোনও অস্তিত্বই ঠাউর করায় দায় হয়ে পড়ে। রাস্তা নয়, নজরে পড়ে থইথই করতে থাকা হাঁটু অবধি কাদাগোলা জল। সোঁতার চেহারা নেয় নাতিদীর্ঘ ওই মেঠো সড়ক। গ্রামের বছর তেরোর কিশোর রনি মল্লিক বেলতলা জুনিয়র হাই মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। তার কথায়, “ওটা আবার রাস্তা নাকি? আলপথ দিয়েও ওই রাস্তার থেকে ভাল করে হাঁটাচলা করা যায়। সাইকেল ঠেলে অগম্য ওই রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে প্রচন্ড কষ্ট হয়।” তবে মাস খানেক আগে পীতাম্বরপুর মল্লিকপাড়ার কাছে প্রায় দেড়শো মিটার রাস্তায় পিচ ঢালা হয়েছিল। কিন্তু সে কাজ আর এগোয়নি।
একই হাল চারাতলা-বেলতলা রাস্তারও। প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা চলাচলের অনুপযুক্ত। পঞ্চায়েতের তরফে আধলা ঝামা ইট পাতা হলেও রাস্তার হাল যথেষ্টই খারাপ। বছর দু’য়েক আগে পাতা ওই ইট বেশিরভাগ জায়গায় উঠে গিয়েছে। মাত্র আট ফুট চওড়া খানাখন্দময় ওই সংকীর্ণ অমসৃণ রাস্তা দিয়ে সদ্য প্রাথমিকের পাঠ চুকানো পড়ুয়াদের সাইকেল করে স্কুল যেতে রীতিমতো যন্ত্রণা পোহাতে হয়। প্রায় হাজার ছ’য়েক লোকের বাস চারাতলায়। এই গ্রাম থেকেই আনুমানিক সাতশো পড়ুয়া বেলতলায় পড়তে যায়। গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্র অম্বর মোল্লার বক্তব্য, “ইটের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বাজে রাস্তায় ঠিকমতো সাইকেল চালানো যায় না।”
এ ছাড়াও বৃত্তিহুদা ও গোখরাপোতা থেকে বেলতলাগামী রাস্তার অবস্থাও তথৈবচ। মোরামহীন রাস্তা চলার অযোগ্য। ফলে ওই দুই গ্রামের পড়ুয়াদেরও স্কুলে পৌঁছতে কষ্টের সীমা থাকে না।
বৃত্তিহুদা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির সম্পাদক কংগ্রেসের রাইহান মোল্লা বলেন, “পাশ্ববর্তী গ্রাম থেকে মাদ্রাসায় যাওয়ার রাস্তা খারাপ। ফলে পড়ুয়া-শিক্ষক সকলেরই সমস্যার অন্ত নেই। চারাতলা ঢাল থেকে বৃত্তি হুদা কালীতলা ভায়া বেলতলা মাদ্রাসা হয়ে পীতাম্বরপুর পর্যন্ত আট কিলোমিটার রাস্তায় পিচ পড়লে সমস্যা মিটত। এ ব্যাপারে স্কিম করে স্থানীয় বিধায়ককে জানানো হলেও কোনও সাড়া মেলেনি।” চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার আওতায় ওই রাস্তা তৈরির জন্য জেলা শাসককে বলেছি। কেন্দ্রীয় অনুদান মিললেই তৈরি হবে সড়ক।” ততদিনে কচিকাচা পড়ুয়াদের ভবিতব্য যন্ত্রণা পোহানো।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.