বঞ্চিত চাষিরা
একশো ভাগ খরচ শুধু মেলায়, কৃষি দফতরের বাকি টাকা পড়েই
কৃষি মেলার জন্য পাওয়া গিয়েছিল ২৯ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। সেই টাকার একশো ভাগই খরচ করেছে কৃষি দফতর। অথচ কৃষিযন্ত্র বিলি, নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ, মাটির স্বাস্থ্য ফেরাতে ‘মেটালিক স্টিল স্ল্যাগ’ বিতরণের অর্থ খরচ করা যায়নি। ২০১২-১৩ আর্থিক বছর শেষে দেখা যাচ্ছে এই সব খাতে বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা পড়ে রয়েছে!
বরাদ্দ টাকা কেন খরচ করা যায়নি? কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর মিহিরচন্দ্র রায়ের সাফাই, “কর্মী সঙ্কটের জন্য কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে তালিকা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। দ্রুত কৃষিযন্ত্র বিলি করা হবে।”
কৃষকদের সুবিধার্থে কৃষিযন্ত্র বিলির তোড়জোর হয়েছিল আগেই। দু’টি প্রকল্পে কৃষি যন্ত্র দেওয়া হয়। একটি প্রকল্পে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, পাওয়ার রেপারের মতো বড় মাপের কৃষিযন্ত্র দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা থেকে ৪০-৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়। এই প্রকল্পে ৭ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা পেয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। অন্য প্রকল্পে কীটনাশক স্প্রে করার মেশিন, ধান জমি থেকে আগাছা তোলার যন্ত্র, বীজ বোনার যন্ত্র বিলি করা হয়। এ ক্ষেত্রে সরকার ৫ হাজার টাকা করে দেয়। এই প্রকল্পে ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে ১ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা পেয়েছিল জেলা। কিন্তু তার মধ্যে ২০ লক্ষ টাকাও খরচ করতে পারেনি। প্রশাসন সূত্রে খবর, যেটুকু টাকা খরচ হয়েছে, তা-ও মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার কল্যাণে। বেলদা ও বিনপুরের দু’টি প্রশাসনিক সভায় বেশ কিছু চাষির হাতে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, পাম্পসেট, পাওয়ার রেপার তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে সময় দু’টি প্রকল্প মিলিয়ে প্রায় ২২ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে তড়িঘড়ি ৩৮ জনের আবেদন মঞ্জুর করা হয়। বাকি সব আবেদন এখনও পড়েই রয়েছে।
কৃষি দফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনার ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। এই প্রকল্পে চারটি ভাগে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ২০১১-১২ আর্থিক বছরে। এর মধ্যে ছিল মাটির অম্লত্ব কমানো। এ জন্য মাটিতে ‘মেটালিক স্টিল স্ল্যাগ’ ব্যবহার করতে হয়। এ জন্য প্রায় ২ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা পেয়েছিল জেলা। এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে মাত্র ৩১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। ১ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে। কৃষি দফতরের ব্যাখ্যা, রাজ্য বীজ নিগমকে অর্ডার দিয়েও ‘মেটালিক স্টিল স্ল্যাগ’ মেলেনি। খারিফ ও বোরো মরসুমে নতুন ধরনের ধান চাষের জন্যও ৩ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা পেয়েছিল জেলা। চাষিদের নিজস্ব জমিতেই ওই পরীক্ষামূলক চাষ হওয়ার কথা। এই প্রকল্পেও প্রায় ৩ কোটি ২২ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে।
তাহলে গত অর্থবর্ষে কী খরচ করল কৃষি দফতর? দেখা যাচ্ছে, শুধু কৃষি মেলা আয়োজনের জন্য পাওয়া ২৯ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার গোটাটাই খরচ করা গিয়েছে। এই পরিসংখ্যান সামনে আসায় ক্ষুব্ধ জেলার কৃষকেরা। তাঁদের বক্তব্য, মেলার টাকা খরচ করা যাচ্ছে, অথচ তাঁদের স্বার্থে প্রকল্প রূপায়িত করা যাচ্ছে না। কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা অবশ্য এ ক্ষেত্রে সদুত্তর দিতে পারেননি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.