|
|
|
|
দাওয়াই শীর্ষ আদালতের |
ধর্ষণের মিথ্যা কলঙ্ক মুছতে পুনর্বাসন |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
ছ’বছর আগের কথা। সপ্তম শেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হন হরিয়ানার বাসিন্দা সুভাষ। সেই থেকে তাঁর ঠিকানা জেল। অবশেষে ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে নিষ্পত্তি হল মামলার। বিচারক রায় দিলেন, সুভাষ নির্দোষ। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল তাঁকে।
সুভাষ একা নন, এ ভাবেই মিথ্যা অভিযোগে জড়িয়ে পড়েন আরও অনেকে। কিন্তু রেহাই পাওয়ার পর স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পথে তাঁদের পাশে কেউ থাকে না। এঁদের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প গড়ার দাবি জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ দিন রায় ঘোষণার পর দায়রা বিচারক বিজেন্দ্র ভট্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, আইন মন্ত্রক এবং আইন কমিশনের কাছে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, “ধর্ষণের মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের পুনর্বাসনের একান্ত প্রয়োজন বলেই মনে করে আদালত।”
বর্তমানে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা এবং সুভাষের পরিস্থিতির কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে আদালত। বিজেন্দ্র ভট্ট বলেন, “মিথ্যা অভিযোগে ফেঁসে যাওয়া মানুষগুলো যাতে ভবিষ্যতে অপরাধ জগতে জড়িয়ে না পড়ে, সরকারেরই সে দায়িত্ব নেওয়া উচিত। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণও দেওয়া উচিত তাঁদের।”
সুভাষের ক্ষেত্রে যেমন অভিযোগ উঠেছিল, সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছেন তিনি। সুভাষ বারে বারে অস্বীকার করে গিয়েছিলেন সে সব। তখন কেউ তাঁর কথা শোনেনি। পরে ক্রমে ক্রমে দেখা যায়, সুভাষই ঠিক। মেয়েটি সপ্তম শ্রেণিতে পড়লেও, সে আদৌ নাবালিকা ছিল না। স্কুলের রেকর্ডই তার প্রমাণ দিয়েছে। এ-ও জানা গিয়েছে, মেয়েটির সঙ্গে সুভাষের সম্পর্ক ছিল। নিজের ইচ্ছেতেই সে তাঁর সঙ্গে পালিয়েছিল। এমনকী মেডিক্যাল রিপোর্টও প্রমাণ করে দিয়েছে, ধর্ষণের অভিযোগ ভিত্তিহীন। মেয়ে যে তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছে, সেই রাগেই সুভাষকে ফাঁসিয়ে দিয়েছিল মেয়েটির বাবা।
কিন্তু সব কিছু প্রমাণ হতে হতেই কেটে গিয়েছে ছ’বছর। ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে বিচার হলেও, ২০০৭-এর মামলার নিষ্পত্তি হল আজ। এ দিন ভট্ট বলেন, “ভাল সময়টাতো আর ওঁকে ফিরিয়ে দিতে পারব না। ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা রইল। ফের নতুন করে ওঁকে জীবন শুরু করতে হবে।”
আইন বলে, শুধুমাত্র ধর্ষিতার বয়ানের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা যেতে পারে অভিযুক্তকে। আর ধর্ষণের অভিযোগে কাউকে ফাঁসিয়ে দিতে এটাই এখন সহজ অস্ত্র হয়ে উঠেছে, বক্তব্য বিজেন্দ্র ভট্টর। সংবাদমাধ্যমেও এ ধরনের অসংখ্য খবর প্রকাশিত হচ্ছে। “বেকসুর খালাসে হয়তো কিছুটা শান্তি মিলবে, নিজেকে নিরপরাধও প্রমাণ করতে পারবে। কিন্তু সারা জীবন এক জন ‘ধর্ষক’ হওয়ার আতঙ্ক নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে,” বললেন তিনি। বিজেন্দ্রর আক্ষেপ, “জীবনের একটা দীর্ঘ সময়ই তো জেলে কেটে গেল। সব স্বপ্ন শেষ, স্বাভাবিক জীবনের ফেরার পথটাও কঠিন।” |
|
|
|
|
|