বিক্রি বাড়াতে গাড়ি সংস্থাগুলি কোনও চেষ্টাই বাদ রাখেনি। প্রচলিত রীতি ভেঙে বার কয়েক আকর্ষণীয় ছাড়ও দিয়েছে। কিন্তু কম দামে গাড়ি কেনার সুযোগ নিতে ভিড় জমেনি শো-রুমে। ফলে সদ্য শেষ হওয়া ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষে যাত্রী গাড়ি (প্যাসেঞ্জার কার) বিক্রি সরাসরি কমেছে ৬.৬৯%। গত এক দশকে যা এই প্রথম। শুধু তাই নয়, গত ১২ বছরে বিক্রি কখনও এতটা কমেনি। ২০০০-’০১ সালে শেষ বার যাত্রী গাড়ির বিক্রি কমেছিল ৭.৭৩%।
২০১২-’১৩ সালের গোড়াতেও গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম-এর আশা ছিল, যাত্রী গাড়ির বিক্রি বাড়বে ১০-১২%। কিন্তু বাজারের অবস্থা দেখে পরে তিন বার পূর্বাভাস বদল করে তারা। গাড়ি শিল্পমহলের অবশ্য আশঙ্কা ছিলই যে, এ বার বিক্রি কমবে কিংবা বিক্রি বৃদ্ধির হার আগের বছরের মতোই থাকবে। যদিও এতটা কমবে, তা আঁচ করতে পারেননি অনেকেই।
বুধবার সিয়াম জানিয়েছে, সব রকম গাড়ি মিলিয়ে ২০১২-’১৩ সালে বিক্রি বেড়েছে মাত্র ২.৬১%। কিন্তু যাত্রী গাড়ির বিক্রি কমেছে ৬.৬৯%। বাণিজ্যিক গাড়িও কমেছে ২.০২%। আর শুধু গত মার্চের হিসেব দেখলে, বিক্রি কমেছে আরও বেশি। যাত্রী গাড়ির ২২.৫১%, বাণিজ্যিক গাড়ির ৬.০৪%।
গাড়ি শিল্পের মতে, দেশের আর্থিক অবস্থারই প্রতিফলন এটা। কারণ আর্থিক অবস্থা বিচারের অন্যতম মাপকাঠি উৎপাদন শিল্প। আর, তার মধ্যে অগ্রগণ্য গাড়ি। যাত্রী গাড়ি বিক্রি কমার অর্থ, গাড়ি কেনার পুঁজি নেই মানুষের। আর বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রি কমা মানে পরিকাঠামো উন্নয়ন-সহ নানা বাণিজ্যিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। সিয়ামের প্রেসিডেন্ট এস শাণ্ডিল্য বলেন, “আর্থিক পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক নয়। গাড়ি কেনার খরচ বাড়ছে। বিশেষত কম দামি গাড়ির সম্ভাব্য ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।”
তবে ভারতে গাড়ির চাহিদার ছবিটাও বদলাচ্ছে। এত কাল এ দেশ ছোট ও মাঝারি গাড়ির বাজার বলেই পরিচিত ছিল। কিন্তু সিয়াম বলেছে, বড় ধরনের গাড়ি ‘ইউটিলিটি ভেহিক্ল’ (ইউভি)-এর চাহিদা বাড়ছে। ২০১২-’১৩ সালে ইউভি-র বিক্রি বেড়েছে ৫২%। সিয়ামের অবশ্য আশা, এ বছরটা গত বছরের মতো খারাপ যাবে না। ২০১৩-’১৪ সালের পূর্বাভাসে তারা জানিয়েছে, যাত্রী গাড়ির বিক্রি বাড়বে ৩-৫%। আর সব মিলিয়ে গাড়ি বিক্রি বাড়বে ৬-৮%। তবে একই সঙ্গে তাদের দাবি, শিল্পোন্নয়নের সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি করতে যথাযথ নীতি নিক সরকার। |