উড়ান পরিষেবা ফের চালু করার জন্য এর আগে কর্মীদের বকেয়া বেতন মেটানোর শর্ত দিয়েছিল বিমান পরিবহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। এ বার পাল্টা শর্ত দিলেন কিংফিশার কর্তৃপক্ষ। বুধবার ডিজিসিএ-কে চিঠি দিয়ে তাঁরা বলেছেন, আগে ওড়ার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হোক। তার পরে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বেতন দেওয়া হবে কর্মীদের।
বিমান সংস্থার যুক্তি, শেষ পর্যন্ত ওড়ার অনুমতি পাওয়া না গেলে কর্মীদের বকেয়া বেতন মেটাতে এত টাকা কেন খরচ করবে তারা? সংস্থার যুক্তিতে সন্তুষ্ট নন ডিজিসিএ-প্রধান অরুণ মিশ্র। জানুয়ারি পর্যন্ত কেন বেতন দেওয়া হবে, তা-ও পরিষ্কার জানাতে পারেনি কিংফিশার। দিল্লি থেকে ফোনে তিনি বলেন, “প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখব। আলোচনা চলছে।”
কিংফিশারের সিইও সঞ্জয় অগ্রবাল বুধবার দেখা করেন অরুণবাবুর সঙ্গে। আট মাস ধরে উড়ান বন্ধ রয়েছে সংস্থাটির। বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করার পরেই ঝাঁপ বন্ধ করে দেয় সংস্থাটি। ডিজিসিএ-ও তার লাইসেন্স বাতিল করে দেয়। গত জুনের পর থেকে বেতন পাননি কর্মীরা। সে জন্য এ বার আইপিএল-এর উদ্বোধনের দিন কলকাতা বিমানবন্দরে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। তার পরেই বকেয়া এক মাসের বেতন দেওয়া হয় তাঁদের। কিন্তু কবে থেকে উড়ান চালু হবে, তা বলতে পারেনি সংস্থা। ‘আবার বিমান চালাতে চাই’ বলে বুধবার তারা লিখিত ভাবে ডিজিসিএ-কে জানিয়েছে। চিঠিতে সঞ্জয় অগ্রবাল জানান, মালিক বিজয় মাল্যের মদ-প্রস্তুতকারক সংস্থা ইউবি গ্রুপ বিমান সংস্থায় টাকা ঢালবে।
সংস্থাটি চিঠিতে জানিয়েছে, প্রথমে ৭টি বিমান দিয়ে তারা পরিষেবা চালু করবে। তার পরে আস্তে আস্তে বিমানের সংখ্যা বাড়ানো হবে। বিভিন্ন বিমানবন্দরে যে গুরুত্বপূর্ণ ‘স্লট’-গুলি কিংফিশারের হাতে ছিল, তা ধরে রাখার জন্য আগেই ডিজিসিএ-কে অনুরোধ করেছিল কিংফিশার। যে সময়-সূচিতে বিমানবন্দর থেকে বিমান ওড়ে, তাকেই ‘স্লট’ বলা হয়।
পুনরুজ্জীবনের জন্য কিংফিশারের প্রস্তাবগুলি ডিজিসিএ মানবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অগ্রবালের দাবি, কিংফিশার উড়ান শুরু করলে আপত্তি নেই বলে লিখিত ভাবে জানিয়েছে পাওনাদার সংস্থাগুলি। তবে সূত্রের খবর, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষই এখনও কিংফিশারকে এমন কোনও ছাড়পত্র দেয়নি। তারাও কিংফিশারের কাছ থেকে বিপুল টাকা পায়। বিমান শিল্পের ওয়াকিবহালরা মনে করছেন, কিংফিশারের এই প্রস্তাব ডিজিসিএ মানলেও সামনের শীতের আগে তারা উড়ান শুরু করতে পারবে না। |