বৃষ্টির দেখা নেই, চাষে সমস্যা
চৈত্র শেষের পথে। কালবৈশাখীর দেখা মেলেনি এখনও। প্রখর গরমে শুরু হয়ে গিয়েছে জলের হাহাকার। ফলে, তিল, পাট ও সব্জি চাষ সমস্যায় পড়বে বলে দাবি তুলেছেন চাষিরা। শুষ্ক আবহাওয়ায় গাছ সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে চাষিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি দফতরও।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই আলু এবং পেঁয়াজ তুলে বহু চাষি জমিতে তিল রোপণ করেন। মার্চ ও এপ্রিলের শুরুতে ঝড়-বৃষ্টি তিল চারা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক হয়। এ বার কালনা মহকুমায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে তিল চাষ হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় বেশির ভাগ তিল চারাই শুকিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন চাষিরা। পরমানন্দ ঘোষ নামে এমনই এক জন জানান, প্রথম দিকে তিলের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করে ঝড়-বৃষ্টি। অথচ এ বার এখনও পর্যন্ত তা হয়নি। আর এক চাষি সালাউদ্দিন মোল্লার দাবি, ‘‘জল কিনে তিল চাষ করলেও লাভ হবে না। শীঘ্র বৃষ্টি না হলে অনেক চারাই জমিতে শুকিয়ে যাবে।”
কালবৈশাখী না হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন পাট চাষিরাও। কালনা মহকুমা জুড়ে ৭৮৪০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। যার মধ্যে পাঁচ হাজার হেক্টরের বেশি চাষ হয় পূর্বস্থলীর দু’টি ব্লকে। প্রতি বছর কালবৈশাখীর পরে মাটি চাষের উপযুক্ত হলে পাট চাষ শুরু হয়। এ বার তা না হওয়ায় পাট চাষের কাজ প্রায় শুরুই করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
ফুটিফাটা জমি। —নিজস্ব চিত্র।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, সময়ে পাট চাষ শুরু না করলে পাট গাছে সেমিলুপার বা ঘোঁড়া পোকার সংক্রমণের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পোকা পাতা এবং নরম কাণ্ডের রস শুষে নেয়। এমনকী চারার মাথার অংশও কেটে ফেলে ওই পোকারা। ফলে কাণ্ডের পাশ থেকে পাতা গজাতে শুরু করে। গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি থমকে যায়। কালনা মহকুমার সহ-কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “এখনও পর্যন্ত বেশির ভাগ জায়গাতেই পাট চাষ শুরু হয়নি। এ বার যা পরিস্থিতি তাতে সেমিলুপারের আক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে চাষিদের সতর্ক থাকতে হবে।” এ ছাড়া পটল, ঢেঁড়স, কুমড়োর মতো অনেক সব্জি বৃষ্টি না হওয়ার জন্য শুকিয়ে যাচ্ছে। আম, লিচুর মতো বেশ কিছু ফলের চাষেও সমস্যা হচ্ছে বলে চাষিদের দাবি। পার্থবাবুর বক্তব্য, “বৃষ্টির অভাবে বোঁটায় লেগে থাকা ছোট আম, লিচুর সতেজ ভাব উধাও। এমনকী থমকে গিয়েছে বৃদ্ধি। শীঘ্র ঝড়-বৃষ্টি না হলে এই পরিস্থিতি চলতে থাকবে।”
বৃষ্টি না হওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন বোরো চাষিরাও। তাঁদের দাবি, বেশির ভাগ জমিতে চাষের জন্য ভরসা মাটির তলার জল। কালবৈশাখীর বৃষ্টি জলস্তর বাড়ায়। তাপস মালিক নামে এক চাষির বক্তব্য, “এ বার চাষের মাঝপথে পর্যাপ্ত জল পেতে সমস্যা হতে পারে। কারণ, প্রথম থেকেই মাটির তলা থেকে প্রচুর জল তোলা হচ্ছে। এখন তাই সবাই বৃষ্টির পথ চেয়ে বসে আছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.