নয়াদিল্লিতে অমিত মিত্রকে হেনস্থার পরে তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা অশান্তি বন্ধের বার্তা দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও নানা জায়গায় সিপিএম অফিসে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এর মাঝে কেতুগ্রামে নিজেদের মধ্যেই গোলমালে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূলেরই দু’টি গোষ্ঠী।
প্রতিবাদ মিছিলকে কেন্দ্র করে কোন্দলে জড়ায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ও বিধায়কের অনুগামীরা। এই ঘটনায় জখম হয়ে চিকিৎসাধীন কেতুগ্রাম ১ ব্লক সভাপতি রত্নাকর দে-র দুই অনুগামী। বুধবার সকালে এই ঘটনার পরে বেশ কয়েকটি গ্রামেও গোষ্ঠীকোন্দল শুরু হয়ে যায়। বিকেলে পুলিশ জানায়, মোট পাঁচ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহানেওয়াজ ও কেতুগ্রাম ১ ব্লক সভাপতি রত্নাকর দে-র অনুগামীদের মধ্যে রেষারেষি অনেক দিন ধরেই। বুধবার সকাল ১০টায় কেতুগ্রাম ১ ব্লকের সদর কান্দরায় মৌন মিছিলের ডাক দেন রত্নাকরবাবু। শেখ শাহানেওয়াজ আবার ১১টা নাগাদ বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন। রত্নাকরবাবুর অভিযোগ, “মিছিল শেষে কান্দরায় দলীয় অফিসের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম আমরা। |
তখন বিধায়কের অনুগামীরা আমাদের উপরে হামলা চালায়। আমাদের দু’জন কর্মীকে তাঁরা গাড়িতে তুলে নানুড়ের পাঁপুড়িতে নিয়ে যায়।” বিধায়কের অনুগামীদের মিছিল শেষ হওয়ার পরে কেতুগ্রাম ও নানুর থানার যৌথ উদ্যোগে আহত দু’জনকে উদ্ধার করে কেতুগ্রাম ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। পরে এক জনকে কাটোয়া হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
পুলিশ জানায়, আহতেরা হলেন তৃণমূলের পালটিয়ার অঞ্চল সভাপতি, কাটারি গ্রামের পুটু শেখ ও টুলু শেখ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শুয়ে তাঁদের অভিযোগ, “মিছিল শেষে কান্দরা থেকে মোটরবাইকে করে কাটারি যাচ্ছিলাম। এমন সময়ে একটি গাড়িতে করে এসে কয়েক জন আমাদের টেনে তুলে নেয়। গাড়িতে যেতে যেতে আমাদের মারধর করে।” |
মাথায় আঘাত লেগেছে পুটু শেখের। তাঁদের আরও অভিযোগ, পাপুড়ি গ্রামে তাঁদের আটকে রাখা হয়েছিল। ব্লক সভাপতির দাবি, হইচই শুরু হওয়ার পরে চারকল গ্রামের মোড়ে ওই দু’জনকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় বিধায়কের অনুগামীরা। পরে কেতুগ্রাম ও নানুর থানার পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।
কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহানেওয়াজ অবশ্য এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি সাফ বলেন, “এমন কোনও ঘটনার খবর আমার জানা নেই।” তবে তাঁর অনুগামীদের দাবি, কাটারি গ্রামে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কয়েক দিন আগে একটা বিবাদ হয়। তার জেরে দু’পক্ষের বচসা ও হাতাহাতি হয়েছে। কিন্তু কাউকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি বলে তাঁদের দাবি। পুলিশ জানায়, কেতুগ্রামের ১ ব্লকের রায়খা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে গোলমাল হয়েছে। রায়খায় তৃণমূলের ওই দুই গোষ্ঠীই পরস্পরের দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে। কেতুগ্রামের আইসি আবদুর গফ্ফর ঘটনাস্থলে যান। পরে পুলিশের কোনও কর্তাই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। সন্ধ্যায় জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, “এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। আইসি পরিস্থিতি সামলে থানায় এলে অভিযোগ করবেন বলে সভাপতির অনুগামীরা থানায় অপেক্ষা করছেন।” |