মোদীর ঋণশোধের ইচ্ছেকে বিঁধল কংগ্রেস
ল এখনও প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা না করলেও তিনি গত কাল রাখঢাক না করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে দেখতে তিনি কতটা ব্যগ্র। কতকটা আগ বাড়িয়েই নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, “গুজরাতের ঋণ শোধ করেছি। মানুষ চাইছে এ বার আমি ভারতমাতার ঋণ শোধ করি।” তাঁর সেই মন্তব্য ঘিরে আজ তীব্র আক্রমণ শানাল কংগ্রেস। খুঁচিয়ে তুলল গোধরা প্রসঙ্গ। ঠারেঠোরে অসন্তোষ জানাল এনডিএ শরিক জেডিইউ-ও।
কংগ্রেস নেতা তথা কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারি আজ বলেছেন, “আমি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য দেখে চিন্তিত। তাঁর রাজত্বে ২০০২ সালে গুজরাতে যা হয়েছে, তা আশা করি গোটা দেশে হবে না।” কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ আলভির আক্রমণ ছিল আরও চড়া সুরে বাঁধা। মোদীর মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করুন।” গত কাল সিআইআই-এর সভায় রাহুল গাঁধী বলেছিলেন, “ভারতীয়দের ধারণা হল, কেউ এক জন ঘোড়ায় চড়ে আসবেন।... আর তিনি সব সমস্যার সমাধান করে দেবেন।” রশিদ আলভির কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, রাহুল ওই কথা মোদীকে উদ্দেশ করে বলেছেন কি না। রশিদ বলেন, “মোদী তো আসবেন মোষের পিঠে চড়ে... না না, ষাঁড়ের পিঠে চড়ে আসবেন! আসলে আমি ঠিক জানি না ষাঁড় কার বাহন।” তাঁর এই মন্তব্যের পরেই কেউ কেউ বলতে শুরু করেন, মোদীকে ‘যমরাজ’ বলেছেন রশিদ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজেপি যত মোদীকে সামনে রেখে এগোবে, বিরোধীরা ততই নিজেদের মতো করে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ককে বার্তা দিতে সক্রিয় হবে। ঘুরিয়ে যে কাজটি আজ করলেন মণীশ-রশিদ।
কংগ্রেসের একটি বড় অংশ মনে করে, মোদী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হয়ে ভোটে লড়লে আখেরে তাদেরই সুবিধে। সে ক্ষেত্রে মোদী প্রশ্নে অনায়াসে সংখ্যালঘু ভোটের মেরুকরণ হবে। তা ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নবীন পট্টনায়ক বা নীতীশ কুমারদেরও এনডিএ শিবিরে যোগ দেওয়াটা সহজ হবে না। বস্তুত, এ দিন মোদীকে ফের বিঁধেছে নীতীশের জেডিইউ। দলের নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি বলেছেন, “যখন এক জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই ধরনের কথা বলেন, তখন বোঝা যায় তিনি দেশের শীর্ষ পদকে মাথায় রেখেই ওই কথা বলছেন। কিন্তু ২০১৪ সালে দেশের মানুষ ঠিক করবেন, কাকে তাঁরা শেষ পর্যন্ত ওই পদে বসাবেন।” সমাজবাদী পার্টি নেতা নরেশ অগ্রবাল মোদীর মন্তব্যকে কটাক্ষ করে বলেছেন, “শুধু মোদী কেন, প্রত্যেক দেশবাসীরই কর্তব্য, দেশের ঋণ শোধ করা।”
মেরুকরণের সম্ভাবনার কথা যে বিজেপি নেতৃত্ব জানেন না, এমন নয়। বস্তুত, দলের মোদী বিরোধী-শিবির আশঙ্কা করছে, মোদীকে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হলে শুধু সংখ্যালঘুরা নন, ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকেও এনডিএ-তে পাওয়া যাবে না। কিন্তু সঙ্ঘের অধিকাংশ নেতা মনে করেন, সংখ্যালঘু সমাজের গরিষ্ঠ অংশ প্রথম থেকেই বিজেপির বিপক্ষে। তাঁরা কোনও অবস্থাতেই বিজেপিকে ভোট দেবেন না। বরং মোদী প্রার্থী হলে হিন্দু ভোট সঙ্ঘবদ্ধ তো হবেই, উপরন্তু যাঁরা সত্যিই ভারতকে ভবিষ্যতে উন্নত ও শক্তিশালী দেশ হিসেবে দেখতে চান, তাঁরাও মোদীর পাশে দাঁড়াবেন। সে ক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলির সাহায্য ছাড়াই সরকার গড়তে সমর্থ হবে বিজেপি। তবে যে ভাবে মোদী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিজের প্রচারে নেমেছেন, দলে তাঁর বিরোধীরা সেটা মোটেই ভাল ভাবে নিচ্ছেন না। তাঁরা মনে করছেন, এই প্রচারে নিজের ও সর্বোপরি দলের ক্ষতি করছেন মোদী। এক নেতার কথায়, “এত আগে থেকে নিজের প্রচারে নামাটা আবার ২০০৪ সালের মতো ইন্ডিয়া শাইনিং না হয়ে যায়! সে ক্ষেত্রে দলের সামনে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা-ও হারাবে বিজেপি।”
মোদী অবশ্য লক্ষ্যে স্থির। আজ কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলেও রবিবারই ফের দিল্লিতে পা রাখছেন তিনি। সরকারি অনুষ্ঠানের সঙ্গে বণিকসভা ফিকির সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। তার পর যাওয়ার কথা কলকাতায়।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.