প্রোটোকল উড়িয়ে নিজের মতোই ঘুরলেন মমতা
মাকে আমার মতো থাকতে দাও। বেঙ্গালুরুতে এক দিনের সফরে এসে এই বার্তাই দিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিজের রাজ্যে যেমন ভিআইপি-সুলভ বেড়াজাল না মেনেই নিজের মতো চলাফেরা করেন, বেঙ্গালুরুতেও তাই-ই করলেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতার এই প্রথম অন্য কোনও রাজ্যে আনুষ্ঠানিক সফর। এর আগে এক বার অবশ্য সিকিম গিয়েছিলেন। তবে সেটা ছিল আকস্মিক ভাবে যাওয়া। সেই সময়ে তিনি উত্তরবঙ্গ সফরে ছিলেন। ভূমিকম্পে সিকিম এবং দার্জিলিঙের অনেকটা অংশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। দার্জিলিং থেকে সটান সিকিমের দুর্গত এলাকায় চলে গিয়েছিলেন মমতা।
এ বারের বেঙ্গালুরু সফর কিন্তু পূর্বনির্ধারিত। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেই তিনি এসেছিলেন সঙ্গীতশিল্পী মান্না দে-কে সম্মান জানাতে। যথারীতি প্রোটোকল মেনে পুরোদস্তুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি ছিল তাঁর জন্য। বিমানবন্দরে ছিলেন কর্নাটক পুলিশের সশস্ত্র কম্যান্ডো। পাইলট, হুটার এ সব তো ছিলই। কিন্তু বিমানবন্দরে পা দিয়েই মমতার প্রথম কাজ হল কম্যান্ডোদের ফিরিয়ে দেওয়া।
সই শিকারিদের মাঝে। বেঙ্গালুরুতে। ছবি: পিটিআই
মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের মতো এখানেও তিনি লাল আলো লাগানো সরকারি গাড়ি চড়বেন না। পরিবর্তে রামকৃষ্ণ মিশনের অনুরোধ মেনে তিনি তাদের গাড়ি ব্যবহার করতে রাজি হন। সেটাই ছিল তাঁর এক দিনের সফরের বাহন। গাড়ির সামনে পথ দেখানোর জন্য পুলিশের একটি ভ্যান ছিল বটে, কিন্তু হুটার বাজানোর হুকুম ছিল না। এমনকী বেঙ্গালুরুর রাস্তায় মুখ্যমন্ত্রীর মতো কোনও ভিআইপির যাতায়াতের সময় যে ভাবে অন্যান্য গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়, মমতার ক্ষেত্রে সেটাও করা হয়নি। কারণ, তিনি নিজে সেটা চাননি।
স্বাভাবিক ভাবেই মমতার মতো পরিচিত মুখকে আশপাশের গাড়ি, বাসের জানলা থেকে দেখতে পেয়ে তাই বিভিন্ন জায়গায় মানুষজন হাত তুলে অভিনন্দন জানিয়েছেন। মমতাও উপভোগ করেছেন সেটা। শুধু তাই নয়, ‘ধন্যবাদ’, ‘ভাল থাকবেন’, ‘শুভেচ্ছা’ ইত্যাদি কথার কন্নড় প্রতিশব্দ জেনে নিয়ে গাড়ির কাচ নামিয়ে কর্নাটকের মানুষজনকে সে সব বলেও এসেছেন। থাকার ব্যাপারেও তাঁর পছন্দ ছিল রীতিমতো বেঁধে দেওয়া। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের আতিথ্য তিনি নেননি। ছিলেন রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্থান এরোনটিকস লিমিটেডের (হ্যাল) অতিথিশালায়। তিনি এবং তাঁর সফর সঙ্গীদের থাকা-খাওয়ার খরচ ব্যক্তিগত তহবিল থেকেই মিটিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে গল্প করেছেন সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে।
শরীরচর্চার অঙ্গ হিসেবে হাঁটা মমতার রোজকার অভ্যাস। আজ ফেরার পথে বেঙ্গালুরুর নতুন বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনে প্রায় এক ঘণ্টা হাঁটার ফাঁকে ফাঁকে আবার সেই জনসংযোগ। হাতের এত কাছে ভিআইপিকে পেয়ে ভারী খুশি বেঙ্গালুরু।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.